কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ফ্লাইট অবতরণের পথে উঁচু গাছের কারণে তীব্র বাতাস সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে, ফ্লাইটগুলো প্রায়ই ঝাঁকুনির কবলে পড়ে। বিষয়টি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে কক্সবাজারের লং বিচ হোটেলের কোজি রেস্টুরেন্টে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম (এটিজেএফবি) আয়োজিত এক কর্মশালায় এ সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। কর্মশালার শিরোনাম ছিল ‘এভিয়েশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইমপ্যারেটিভস ফর এভিয়েশন সেফটি’।
নভোএয়ারের চিফ অব সেফটি ক্যাপ্টেন আশফাক-উর-রহমান খান পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ফ্লাইট সেফটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অবতরণের পথে থাকা উঁচু গাছগুলো তীব্র বাতাস সৃষ্টি করে। এই বাতাসের কারণে প্লেনে টার্বুলেন্স (ঝাঁকুনি) হয়। যাত্রীরা প্রায়ই মনে করেন এটি পাইলটের ত্রুটি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি প্রাকৃতিক কারণে ঘটে। এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ইতোমধ্যে চিঠি পেয়েছে।
ক্যাপ্টেন আশফাক আরও উল্লেখ করেন, ফ্লাইট সেফটির সঙ্গে রানওয়ের পৃষ্ঠ সমতল রাখা এবং উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম স্থাপনের গুরুত্ব রয়েছে। পাশাপাশি, যাত্রী ও ফ্লাইট কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নিয়ম-কানুন মেনে চলার প্রস্তাব দেন।
ফ্লাইট সেফটি বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, বিমানবন্দর এলাকায় বার্ড হিট প্রতিরোধে সাউন্ড গানসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে বিমানবন্দরের আশপাশে থাকা কসাইখানা ও মাছ চাষ বন্ধ করা প্রয়োজন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, পাইলটদের চোখে লেজার লাইট মারার ঘটনাগুলোও উদ্বেগজনক। বিদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করলেও বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি কম।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন এটিজেএফবির সভাপতি ও বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি তানজিম আনোয়ার। উপস্থিত ছিলেন নভোএয়ারের হেড অব মার্কেটিং মেজবাহ-উল ইসলাম। কর্মশালার শেষে এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান টিভির প্রধান প্রতিবেদক বাতেন বিপ্লব ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি, সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
উঁচু গাছ, তীব্র বাতাস, বার্ড হিট, এবং লেজার লাইট—এসব সমস্যার কারণে কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরে ফ্লাইট সেফটি নিয়ে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতি উন্নত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।