সেলিনা আক্তারঃ
দেশে কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) সংখ্যা গত ৮ ফেব্রুয়ারি ১ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে। পরবর্তী আড়াই মাসে আরো ২ লাখ টিআইএনধারী যুক্ত হয়েছেন। এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল পর্যন্ত টিআইএনধারী ১ কোটি ২ লাখের সামান্য বেশি।
এই সময়ে নতুন ২ লাখ টিআইএন যুক্ত হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। অবশ্য টিআইএন বাড়লেও দেশে কর রিটার্ন সে হারে বাড়ছে না। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম বাদে প্রায় সব টিআইএনধারীকে রিটার্ন জমা দিতে হয়। অথচ এনবিআরের হিসাব বলছে, সর্বশেষ বছরে রিটার্ন জমা হয়েছে প্রায় ৩৭ লাখ। মূলত পিএসআর বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোর মনিটরিং বাড়ার ফলে টিআইএনের পাশাপাশি রিটার্ন জমার হারও বাড়ছে বলে জানায় এনবিআর সূত্র। এ অর্থবছরে ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ৪০৬ জন করদাতা রিটার্ন দিয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ লাখের কিছুটা বেশি। এ বছর রিটার্ন বাবদ কর পাওয়া গেছে ৫ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা।উল্লেখ্য, আগে ৩৮ ধরনের সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। তবে চলতি অর্থবছরে এর আওতা আরো বাড়িয়ে ৪৩টি সেবা করা হয়।
এই ৪৩টি সেবার মধ্যে অন্যতম হলো ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ আবেদন করলে; ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে; ক্রেডিট কার্ড নিলে; কোনো কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ার হোল্ডার হলে; ব্যবসায় সমিতির সদস্য হলে; কারও সন্তান বা পোষ্য ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করলে; অস্ত্রের লাইসেন্স নিলে; উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হলে; চিকিত্সক, প্রকৌশলী, স্থপতি, সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ হিসেবে কাজ করলে; ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ন করলে; সিটি করপোরেশন এলাকায় গ্যাস-বিদ্যুত্সহ সরকারি পরিষেবার সংযোগ নিতে হলে; ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত থাকলে; সরকার কর্মচারী ১৬ হাজার টাকার বেশি মূল বেতন পেলে; নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়িভাড়া বা লিজ গ্রহণের সময় বাড়ির মালিকের; নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সেবা বা পণ্য গ্রহণকালে ঐ পণ্য বা সেবা সরবরাহকারীর; ট্রাস্ট, তহবিল, ফাউন্ডেশন, এনজিও, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী সংস্থা, সোসাইটি ও সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাব খুলতে ও চালু রাখতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও কার্টিজ পেপারে ভেন্ডার বা দলিল লেখক হিসেবে নিবন্ধন, লাইসেন্স বা তালিকাভুক্তি করতে বা বহাল রাখতে; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে এমন গঠিত কর্তৃপক্ষ বা অন্য সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় অনুমোদনের জন্য ভবন নকশার আবেদন দাখিলকালে।