জেলা প্রতিনিধি,মুন্সীগঞ্জঃ
মুন্সীগঞ্জে মাত্র আধা ঘণ্টার শিলাবৃষ্টিতে কোটি টাকার বাঙ্গি নষ্ট হয়েছে। মধ্যরাতের কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার খাসকান্দি ও রমজানবেগ এলাকার বাঙ্গিচাষিদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। মাত্র আধা ঘণ্টার এ শিলায় বাঙ্গিতে কোটি টাকার ক্ষতির দাবি করেছেন কৃষকরা। এছাড়া আমগাছ ও আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
গাছের অর্ধেকেরও বেশি কাঁচা আম পড়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে পড়ে পল্লী বিদ্যুতের লাইনের ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (৬ মে) সারাদিন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্নস্থানে বিদ্যুতের লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।বেলা ১২টার দিকে সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ সদরের খাসকান্দি ও রমজানবেগ এলাকা ঘুরে দেখা যায, শিলাবৃষ্টির আঘাতে বাঙ্গির খেত তছনছ হয়ে গেছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ওই দুই এলাকার প্রায় ৮০ জন কৃষক বাঙ্গি আবাদ করেছেন। সপ্তাহ খানেক পরই আবাদ করা বাঙ্গি উত্তোলন করে বাজারে বিক্রির কথা ছিল। অনেকদিন পর লাভের স্বপ্ন দেখছিলেন তারা। কিন্তু মধ্যরাতের শিলাবৃষ্টিতে তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এতে একেকজন চাষির ১ থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে।
রমজানবেগ এলাকার কৃষক আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া (৬৫) বলেন, ৬০ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি বুনেছি। ৭ দিন পরই বাঙ্গি তুলতাম। আর এ বাঙ্গি বাজারে ৩-৪ লাখ টাকা বেঁচতে পারতাম। কিন্তু রাতের শিলাবৃষ্টিতে আমার সব বাঙ্গি শেষ।একই এলাকার কৃষক মো. কাদির আলী (৬০) বলেন, শিলা পইড়্যা আমার খেতের সব বাঙ্গি শেষ হইয়া গেছে। ৬০ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি করেছি। ২ লাখ টাকা বেঁচতে পারতাম। এহন তো এক টাকাও পাইলাম না।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে বাঙ্গি চাষ করেছিলেন খাসকান্দি এলাকার ওমর আলী (৪০)। তিনি বলেন, দেশে ফিরেই নিজের বাপ-দাদার জমিতে বাঙ্গি আবাদ করি। এতে খরচ হয়েছে ২ লাখ টাকা। ৭-৮ দিন পরই জমি থেকে বাঙ্গি তুলে বাজারে নিয়ে যেতাম। কিন্তু শিলায় সেই আশায় গুঁড়ে বালি। শিলার আঘাতে জমির সব বাঙ্গি নষ্ট হয়ে গেছে। এহন আর এক টাকারও বাঙ্গি বেঁচতে পারলাম না।রোববার দিবাগত মধ্যরাত ১২টার দিকে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায় মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে। কালবৈশাখী ওই ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি পড়ে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। পৌরসভাটির খাসকান্দি ও রমজানবেগ এলাকাজুড়ে জমিতে আবাদ করা বাঙ্গি ওই শিলাবৃষ্টির আঘাতে শেষ হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে জেলায় ৩০ হেক্টর অধিক জমির ফসলের ব্যাপক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হেক্টর জমির শাকসবজির ক্ষতি হয়। এছাড়া ৫ হেক্টর জমির বাঙ্গি চাষের ক্ষতি সাধন হয়।