আমাদের দর্শকের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে: তটিনী

প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক:

 

তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এই সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল। বছরব্যাপী নাটকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তিনি। সম্প্রতি উত্তরার একটি শুটিং সেটে দেখা হয় তাঁর সঙ্গে। সেখানেই কাজের ব্যস্ততা ও নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

কোন নাটকের শুটিং করছেন, এর গল্প ও আপনার চরিত্রটা কেমন?
নাটকটির নাম ‘হৃদয়ে রেখেছি গোপনে’। নাটকটি নির্মাণ করছেন মাহমুদ মাহিন। অল্প কথায় বললে এটা প্রেম ও পারিবারিক গল্পের নাটক। এখানে আমার বিপরীতে অভিনয়ে করছেন ইয়াশ রোহান। নাটকের গল্পে আমি দেশের বাইরে বড় হয়েছি, পরে দেশে আসি। আমার চরিত্রটির মধ্যে বাঙালি সংস্কৃতি আছে।

ভালোবাসা দিবসের নাটকে কেমন সাড়া পেলেন?
আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো। ভালোবাসা দিবসের যে কয়টি গল্পে অভিনয় করেছি, সবগুলোতে দর্শকের ভালো সাড়া পেয়েছি। এর মধ্যে ‘তোমায় পাব কি’ নাটকে চট্টগ্রামে প্রথমবার শুটিং করেছি। শহরটা আমার কাছে দারুণ লেগেছে।

 

নাটক তো অনেক হলো। সিনেমায় কবে আসছেন?
সত্যি কথা বলতে সিনেমার প্রস্তাব আমি পেয়েছি। কিন্তু সিনেমায় অনেক প্রস্তুতির বিষয় আছে। সব কিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়, কোন গল্পে অভিনয় করছি, সেটা বিষয়। আমি বলে ফেললেই তো সিনেমা করা হয়ে গেল না! চরিত্রের মূল্যায়ন তো থাকতে হবে। যখন মনে হবে এই চরিত্রের জন্যই আমি এত বছর অপেক্ষা করেছি, তখনই সিনেমা করব।

আফরান নিশোর সঙ্গে ওটিটিতে একটা কাজের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কাজটা কি করছেন?
এটা নিয়ে আপাতত কিছু বলতে চাই না। কারণ এখনও অফিসিয়ালি আমাদের কোনো ঘোষণা আসেনি। তাই কিছু না বলাই ভালো।

এখন তো সবাই ওটিটির কাজের দিকে ঝুঁকছে। এদিকে আপনি নেই…
আমি নাটক নিয়মিত করছি। নাটক নিয়ে আমার একটা ধারণা তৈরি হয়ে গেছে। ওটিটিতে যেহেতু আমার এখনও শুরু হয়নি। তাই ভেবেচিন্তে সময় নিয়ে ভালো গল্পে কাজ করতে চাই। তবে ওটিটির কাজ করার মতো গল্প আমার কাছে খুব একটা আসেও না।

 

ইদানীং নাটকের নাম পরিবর্তন করে সেটা পুনরায় আপলোড করা হচ্ছে, বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন?
বিষয়টি আমারও চোখে পড়েছে। আমাদেরই কিছু নাটকের নাম পরিবর্তন করে রি-আপলোড করা হচ্ছে। আমার মনে হয়, এটা আমাদের দর্শকের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা। কারণ দর্শক আমাদের কাজ দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে। সুতরাং নতুন থামলেন দিয়ে পুরোনো কাজ নতুন বলে চালিয়ে দেওয়া এক ধরনের অসৎ কাজ।

নাটকের ভিডিও ক্লিপ নিয়ে মাঝে মাঝে বিতর্ক দেখা যায়। এটা কীভাবে দেখেন?
আমাদের এখন একটা রীতি হয়ে গেছে, বিতর্কিত একটা কোনো কিছু করে কীভাবে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। এটার জন্য ভালো ভালো কাজ চাপা পড়ে যায়। আবার অনেক সময় এটা ব্যক্তিগত জীবনের ওপরও প্রভাব পড়ে। সেই জায়গাতে আমার একটু সচেতন হওয়া উচিত।

জনপ্রিয়তা যত বাড়ছে চাপ-দায়বদ্ধতাও কী বেড়েছে?
দায়বদ্ধতা তো বেড়েছেই। আমার মনে হয় এটা আমার জন্য আশীর্বাদ। কারণ দর্শক আমাকে এতটা ভালোবাসেন, এটা তো অনেকে চেয়েও পান না। যেহেতু আমি জায়গাটা অর্জন করতে পেরেছি, সেহেতু আমি চাই তাদের প্রত্যাশাটা যথাযথভাবে পূরণ করতে।’

সামাজিক মাধ্যমে তারকাদের অসংখ্য আইডি, বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
এটা আসলে উচিত নয়। এটার কারণে আমাদেরই সমস্যায় পড়তে হয়। মাঝে মধ্যে আমাদেরই আইডি মানুষ খুঁজে পায় না। আগে আমার একটি অফিসিয়াল পেজ ছিল, এখন সেটাও নেই। জানি না আমি কার কোন ক্ষতি করেছি। আমি মনে করি এই জিনিসগুলো ঠিক না।

 

‘পথে হলো দেখা’ আসবে কবে?
‘পথে হলো দেখা’ ও ‘পথে হলো দেরি’ এই দুটি কাজ আমার জীবনের একটি অংশজুড়ে আছে। এর মধ্যে ‘পথে হলো দেরি’ কাজটি আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। সেজন্য নির্মাতা জাকারিয়া সৌখিন ও অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ভাইয়ার কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। তারা আমার ওপর বিশ্বাস রেখে ওই চরিত্রে আমাকে সুযোগ করে দিয়েছেন।

নারীপ্রধান গল্প নিয়ে আপনার ভাবনা?
নারীপ্রধান গল্পে এর আগে আমি কয়েকটি কাজ করেছি। এ ছাড়া নারীপ্রধান গল্পে কিছু কাজও হাতে রয়েছে। তবে আমি চেষ্টা করছি, গল্প ও চরিত্রে ভিন্নতা আনার।

মেহজাবীনের সঙ্গে আপনার তুলনা করে। আপনার কেমন মনে হয়?
একজনের সঙ্গে অন্যজনের তুলনা হয় না। তবে ভালো লাগে, তাঁর মতো একজন গুণী অভিনেত্রীর পাশে মানুষ যখন আমাকে বসায়। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি সব সময় বলি, মেহজাবীন আপু আমাদের প্রজন্ম ও আমার পরের প্রজন্মের জন্য উদাহরণ হয়ে আছেন। কারণ তাঁর ক্যারিয়ার ও কাজের প্রতি সততা আমাকে মুগ্ধ করে। তাঁর কাছ থেকে এই বিষয়টা আমাদের নেওয়া উচিত।