আমিরাতে স্মরণকালের সেরা পবিত্র মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিল

প্রকাশিত: ৮:২৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামকে ধূলির ধরায় প্রতিষ্ঠা করে মানবজাতিকে হেদায়েতের জন্যে শুভাগমন করেন রাহমাতুললিল আলামিন (দ.)। তিনি কোনো নির্দিষ্ট জাতির জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবের জন্য প্রেরিত রাসুল (দ.) । যার মাধ্যমে চূড়ান্ত পরিপূর্ণতা পেল ইসলাম এবং সমাপ্তি ঘটল নবুয়তের। আইয়্যামে জাহিলিয়্যাতে পৌত্তলিকতার পাপাচারে লিপ্ত মানবসম্প্রদায়কে তিনি আল্লাহর বান্দেগি শিখিয়েছেন। দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনে মহাসাফল্য লাভের জন্যে খোদায়ী বিধান হিসেবে তোহফা এনেছেন আল কুরআন। যিনি ধরায় এসে ঘুচিয়ে দিয়েছেন, ধনী-গরিব,উঁচুনীচু সব জাত-বর্ণের বিভেদ, প্রতিষ্ঠা করেছেন ন্যায়-সাম্য-সম্প্রীতিময় আদর্শ সমাজ।
নবীজিকে নিজের জীবনের চেয়েও অধিকতর ভালোবাসার মাধ্যমে মানুষ পৌঁছে যায় ইমানের পূর্ণতায়। রাসুলুল্লাহর (দ.) মুহাব্বত ঈমানের অন্যতম পূর্বশর্ত। মুমিনদের প্রাণের স্পন্দন ছৈয়্যদুল মুরছালিন (দ.)। যুগ যুগ ধরে উম্মতে মুহাম্মদীকে সত্যিকারের নবী প্রেম শিখিয়েছেন হজরত গাউছুল আজম (রাদি.)। তার বর্ণাঢ্য জীবনের পরতে পরতে নবীজিকে ভালোবাসার অনন্য সব দৃষ্টান্তই বলে দেয়, হুব্বে মোস্তফার ভুবনে তিনি উজ্জ্বল নক্ষত্র। অলৌকিকভাবে নবিজির বায়াত লাভের মাধ্যমে পেয়েছেন খলিফায়ে রাসুলের মর্যাদা। শরিয়ত ও তরিক্বতের ইলম অর্জন করে সবার মাঝে তা বিস্তার করেছেন। ফলে সমাজ থেকে দূরীভূত হচ্ছে কুসংস্কার। নবীর আদর্শে জীবন গঠনে উজ্জীবিত করেছেন যুবকদের। পথহারা মানুষদের সিরাতুল মুস্তাকিমের দিকে আহ্বান করে ছিনা-ব-ছিনা তাওয়াজ্জুর মাধ্যমে নূরে মোস্তফা বিতরণ করছেন। তাওয়াজ্জুহ প্রদানের মাধ্যমে নফসের প্রভাব থেকে মানুষকে পবিত্র করে রুহানিয়্যতকে বিকশিত করেছেন। রাসুলনোমা এই তরিক্বতের অনুসরণে মানুষ আজ ফয়েজে কুরআনের নূর লাভে ধন্য হচ্ছে, মোরাকাবার অনুশীলনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করছেন। এভাবে অপসংস্কৃতির চর্চা থেকে যুবকদের ফিরিয়ে এনেছেন আল্লাহ ও রাসুলের পথে। নবীপ্রেমের ঐশি পথের নিয়ামত বিতরণের জন্য গঠন করেছেন মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশ। যার মাধ্যমে তরিক্বতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তরিক্বতের শিক্ষা প্রসারিত হচ্ছে আরব থেকে আজমে চতুর্দিকে।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল উইনার্স ক্লাবে মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত শাখাগুলোর উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশাল মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মোর্শেদ আওলাদে রাসূল (দ.) অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মহান মোর্শেদে আজম।
মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবুধাবি পুলিশের সিনিয়র অফিসার সালেম মাহমুদ মোবারক আল সেকলি ও জিসিসি জেনারেল ট্রান্সপোর্ট ডাইরেক্টর হামাদ সালেহ আবদুল্লাহ হামিস আল রামসী।

দুবাই কমিউনিটির জনপ্রিয় প্রবীণ ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব মুহাম্মদ হারুন এম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বক্তব্য দেন মাওলানা মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বোগদাদী, মাওলানা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুরুল আলমসহ অনেকে।
স্মরণকালের সেরা এ পবিত্র মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিলে আমিরাতের বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা, প্রবাসী বাংলাদেশি, ভারত, পাকিস্তান, স্থানীয় আরবি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উপস্থিতিতে মাহফিল প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকাগুলো ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। কোথাও ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই।

এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সালতানাত অব ওমান এবং কাতারের বিভিন্ন শাখাগুলোর তরিক্বতপন্থিরা আমিরাতে অনুষ্ঠিত এ মাহফিলে লাইভে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

মিলাদ কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি ও উপস্থিত সবার ইহকালীন কল্যাণ, পরকালীন মুক্তি এবং কাগতিয়ার গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।