নিজস্ব প্রতিবেদক:
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। সেই ভাষণে তিনি শিক্ষার্থীদের আদালতের রায় পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি মঙ্গলবার যারা নাশকতা তাণ্ডব করেছে, সেই সমস্ত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ঘোষণায় আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে চলছে কমপ্লিট শাটডাউন। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সরকার এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তবে শিক্ষার্থীরা জানান, তারা পড়ার টেবিলে ফিরতে চায়। সরকারের কাছ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে। আমাদের আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনার পথ ও খোলা থাকবে।
সুধীজনরা মনে করছেন, এখনও কোটা সংস্কার নিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ সম্ভব। সরকার এবং কোটা সংস্কারের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি উন্নতি করা সম্ভব বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন।
বিশেষ করে ক্যাম্পাসগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ফলে একটি ইতিবাচক দিক হল যে ছাত্রলীগকে সংঘর্ষে দেখা যায় না। ফলে সরকারের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের আলোচনার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা শিক্ষার্থী আছে তারাও আলোচনাকে নাকচ করে দেবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই, বরং এই মুহূর্তে যদি সরকারও আলোচনার প্রস্তাব দেয় এবং সেটি যদি তারা নাকচ করে দেয় তাহলে জনমত তাদের বিপক্ষে চলে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র বলছে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছেন কেবল কোটা সংস্কারের। তারা সরকারের সুনাম ক্ষুন্নের বিপক্ষে দাঁড়াতে চাচ্ছেন না। আন্দোলনকারীদের একাংশ চাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো মূল্যে সরকারের পতন। আর এ কারণেই সবার সঙ্গে আলোচনা না করে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে শাটডাউনের।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলছেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু নমনীয় সেক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শেষ করা উচিত। কিন্তু সমন্বয়কদের একটি পক্ষ আন্দোলনকে সারাদেশে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, কোটা আন্দোলনের যেসব সমন্বয়করা রয়েছেন তারা বেশিরভাগই সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আগেও তাদের নিষিদ্ধ সংগঠন শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ রয়েছে। আর সেই যের ধরে শিবির ছাত্রদলের পরামর্শে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এমনকি দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পার্টি অফিসে তাদের নির্দেশনাতেই হামলা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে নেই। এটা অনেক আগেই ছিনতাই হয়ে গেছে। দেশব্যাপী নৈরাজ্য চালানোর জন্য নতুন এ হঠকারী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শিক্ষার্থীদের যে দাবি সেই দাবির সঙ্গে সারাদেশে এ ধরনের কর্মসূচির কোনো মিল নেই।