আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর ওপর চাপ বাড়াতে রাশিয়া এবার খারকিভ অঞ্চলে অভিযান শুরু করেছে। নিরীহ মানুষের উদ্ধারের কাজ চলছে। এদিকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের নেতৃত্বে রদবদল করেছেন পুতিন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে যথেষ্ট অস্ত্র হাতে পাওয়ার আগেই ইউক্রেনের দুর্বলতার সুযোগের সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। এখনো পর্যন্ত মূলত ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্ব প্রান্তে সামরিক তৎপরতা চালানোর পর মস্কো এবার নতুন জায়গায় হামলা শুরু করেছে। গত শুক্রবার থেকে উত্তর পূর্বে খারকিভ অঞ্চলে যতটা সম্ভব জমি দখল করতে বড় অভিযান শুরু করেছে রুশ সেনাবাহিনী। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ভোভচানস্ক শহরের উপকণ্ঠে দুই বাহিনীর মধ্যে জোরালো সংঘর্ষ চলছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বক্তব্য অনুযায়ী অগ্রসর হওয়ার ২২টি প্রচেষ্টার মধ্যে ১৪টি ক্ষেত্রে রুশ বাহিনী কিছু ‘কৌশলগত সাফল্য’ পাচ্ছে। নিজস্ব সৈন্যদের প্রাণহানি উপেক্ষা করে রুশ বাহিনী বেপরোয়া অভিযান চালাচ্ছে। ইউক্রেনের দাবি, কমপক্ষে ১০০ রুশ সৈন্য নিহত হয়েছে। তবে ভোভচানস্ক শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার পরস্পরবিরোধী দাবি শোনা যাচ্ছে। রোববার রাশিয়া জানিয়েছে, আরো চারটি গ্রাম তাদের দখলে এসে গেছে।
রুশ বাহিনীর এমন বড় আকারের অভিযানের মুখে নিরীহ মানুষের উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা আক্রান্ত এলাকার মানুষদের অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে ‘ইভেকুয়েশন পয়েন্ট’-এ চলে যাওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন।গত কয়েক দিনে প্রায় ৬ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে খারকিভের গভর্নর জানিয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমার জেলেনস্কি তার দৈনিক ভিডিও বার্তায় খারকিভ অঞ্চলের গ্রামগুলিতে ‘রক্ষণাত্মক সংঘর্ষ’-এর উল্লেখ করেছেন।
তবে তার মতে, সেখানে সংঘর্ষের মাত্রা দনিয়েৎস্ক অঞ্চলের মতো এত তীব্র নয়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের ওপর হামলা শুরু করার সময়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনী খারকিভ শহরের উপকণ্ঠে পৌঁছে গিয়েছিল। জোরালো প্রতিরোধের মুখে তারা আবার সীমান্তে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এই মুহূর্তে বাসিন্দারা শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন না। খারকিভের মেয়র ইগর তেরেখভ বলেন, শহর আপাতত শান্ত রয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বড় রকম রদবদল এনেছেন। দীর্ঘকালের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু-কে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করে পুতিন নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে আন্দ্রেই বেলুসভের নাম ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদে সেই সিদ্ধান্ত অনুমোদন হওয়ার কথা। পুতিনের বিশেষ অনুগত হিসেবে পরিচিত শোইগু রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।