ইয়েমেনে অপহৃত জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তার ভিডিও প্রকাশ

প্রকাশিত: ২:২৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২৩

অপহৃত জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তা একেএম শফিউল আনাম। ছবি: সংগৃহীত

 

গত বছর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইয়েমেনের এডেন শহরে জাতিসংঘ মিশনের যে বাংলাদেশি কর্মকর্তা অপহরণের শিকার হয়েছিলেন, তার একটি ভিডিও সামনে এসেছে।
অপহরণের ১৬ মাস পর একেএম শফিউল আনাম নামে ওই বাংলাদেশির ভিডিও প্রকাশ করেছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল কায়েদার ইয়েমেন শাখা। এএফপির এক প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে।

 

ওই ভিডিও বার্তায় একেএম শফিউল আনাম নিজেই কথা বলেছেন। নিজেকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা বিভাগের একজন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে নিজের ও সঙ্গে বন্দি আরও দুইজনের মুক্তির আবেদন জানিয়েছেন। বলেছেন, তার সঙ্গে থাকা দুইজন ‘গুরুতর অসুস্থ’।

গত বছরের (২০২২) ফেব্রুয়ারি এডেন শহরে কাজ শেষে ফেরার পথে শফিউল আনাম ও তার ৪ সহকারীসহ মোট ৫ জনকে অপহরণ করে আল কায়েদা। কোনো খোঁজই পাওয়া যাচ্ছিল না শফিউল ও তার সহকারীদের।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও’র নীল জামা ও চশমা পরা ব্যক্তিকে বাংলাদেশের শফিউল আনাম বলে চিহ্ণিত করে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সংস্থা। সংস্থাটি বিশ্বের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ বলছে, শফিউল আনাম যে ভিডিও বার্তা পড়েছেন তা গত ৩ জুন রেকর্ড করা বলে মনে হয়েছে। তবে বিবৃতিটি শফিউল নিজে লিখেছেন, নাকি কেউ লিখে দিয়েছে- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিডিও বার্তায় শফিউল আনাম বলেন, এটা তার দ্বিতীয় ভিডিও বার্তা। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে সাহায্যের আর্তি জানিয়ে প্রথম বার্তাটি দিয়েছিলেন তিনি।

২০১৫ সালে ইয়েমেন সংঘাত শুরু হয়। হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দে রাব্বু মনসুর আল হাদি রাজধানী সানা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। তার পলায়নের পর রাজধানী দখল করে নেয় হুথি বিদ্রোহীরা।

আব্দে রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ফের ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতায় ফেরাতে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট অভিযান শুরু করে। এর মধ্যদিয়ে শুরু হয় দীর্ঘ এক রক্তক্ষয়ী সংঘাত।
একিউএপি ও আরও কয়েকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দ্রুতই এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। আল-কায়েদা ইয়েমেন শাখা ও সৌদি শাখার সমন্বয়ে গঠিত একিউপি। আরেক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তারা।

আট বছর পরও ইয়েমেন সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। উদ্বাস্তু হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। গৃহযুদ্ধের কারণে নজিরবিহীন ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে ইয়েমেন।