বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ইরানের। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৭৫ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪২৯ জন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট’র এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানে করোনায় মৃতদের দাফন করা হচ্ছে গণকবরে।
করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজারের বেশি। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইতালি; এই চার দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করলেও ইরান ও ইতালিতে বেড়েই যাচ্ছে।
চীনে ভাইরাসের বিস্তার এমন পর্যায়ে কমে এসেছে যে দেশটি ইতালিতে চিকিৎসাকর্মী পাঠাচ্ছে এবং ইরানে সরঞ্জাম পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
ইরানের পরিস্থিতি এতই ভয়াবহ যে বৃহস্পতিবার দেশটিতে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে নতুন ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২৯ জনে। যা মধ্যপ্রাচ্যে সর্বোচ্চ।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুশ জাহানপুর রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমকে বলেছেন, গত চব্বিশ ঘণ্টায় আমরা নতুন ১ হাজার ৭৫ জন কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তকে শনাক্ত করেছি। এতে আমাদের দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৭৫ জনে। মৃতের সংখ্যা ৪২৯।
ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৫০০ কোটি ডলার জরুরি তহবিল চেয়েছে ইরান।
ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে ভাইরাসের সংক্রমণ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়েছে যে দেশটিতে মৃতদের গণকবরে দাফন করা শুরু হয়েছে। রাজধানী তেহরান থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দূরে বেহেশত-ই-মাসৌমেহ এলাকায় এই গণকবর খোঁড়া হয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, ২১ ফেব্রুয়ারি এই নতুন গণকবর খোঁড়া শুরু হয়। কিন্তু দ্রুতই তা বড় হতে থাকে। এখন তা ১০০ ইয়ার্ড ছাড়িয়ে গেছে। ওয়াশিংটন পোস্ট যে ভিডিওর বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে তা বিবিসি পারসিয়ান ভাষার ধারণ করা ফুটেজ। এতে দেখা গেছে, বিবিসির প্রতিনিধি গণকবর দেখাচ্ছেন।
ইরানে করোনা ভাইরাসে দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, মাওলানা ও অভিজাত বিপ্লবী বাহিনীর কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম বৃহস্পতিবার জানায়, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির এক শীর্ষ উপদেষ্টা আলি আকবর বেলায়াতি আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত সাতজন কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন ইরান প্রথম ভাইরাসে আক্রান্ত ও দুজনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা দিয়েছিল।