ঈদযাত্রায় যাত্রীদের ঘাড়ে ফিরতি ট্রিপের ‘বোঝা’, নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
আফরিন আক্তারঃ
মাদরাসা শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ঈদ উপলক্ষ্যে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণা যাবেন তিনি। মহাখালী বাস টার্মিনালে এসেছেন বাড়িফেরার বাসে চড়তে। নেত্রকোণাগামী শাহজালাল এক্সপ্রেসের টিকিট কাটতে গিয়ে শোনেন প্রতি টিকিটের দাম নেওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা। অন্য সময় যে টিকিটের দাম নেওয়া হয় ৪০০ টাকা।
মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, সবসময় নেত্রকোণায় যাওয়া-আসা করি ৪০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু আজ টিকিট কাটতে এসে দেখি ভাড়া রাখা হচ্ছে ৮০০ টাকা। আমি শিক্ষার্থী, এত টাকা ভাড়া দিয়ে বাড়ি যাওয়া আমার জন্য কঠিন।এ শিক্ষার্থীর অভিযোগ, অনেক বাস টিকিট না দিয়েই যাত্রী পরিবহন করছে। তারা ইচ্ছে মতো ভাড়া নিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি প্রথমে কাউন্টারে গিয়েছিলাম। সেটা বন্ধ দেখা যায়। পরে বাসের সামনে গেলে একজন ডাক দিয়ে বললেন কই যাবেন? উত্তর জানানোর পর তিনি বললেন, এই বাসে উঠে পড়েন, ভাড়া ৮০০ টাকা। আমি বললাম, টিকিট কই? তিনি বললেন, টিকিট লাগবে না।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে আরও বেশ কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া এবং টিকিটবিহীন যাত্রী পরিবহনের অভিযোগ মিলেছে।সৌখিন পরিবহনের বাসে চড়ে ময়মনসিংহ যাবেন ইখলাস উদ্দিন। তিনি জানালেন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে তার কাছ থেকে ২০০-৩০০ টাকা অতিরিক্ত চাওয়া হচ্ছে।
ইখলাস বলেন, আমরা সবসময় ৩০০ টাকার মধ্যেই ময়মনসিংহ যাই। আজ ৫০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হচ্ছে। পরিবহনের লোকজন বলছে, যাইলে যান, না যাইলে নাই। এখন কিছু তো করার নাই, যেতে হবেই।এ বিষয়ে বাস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা ছেড়ে যেসব বাস গন্তব্যে যায়, ফেরার সময় সেগুলো প্রায় খালি ফেরে। তাই ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহগামী একটি পরিবহনের এক কর্মী বলেন, অন্যান্য সময়ে সরকারি যে ভাড়ার চার্ট, তার চেয়ে ভাড়া কম নেওয়া হতো। এখন নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে যাত্রীরা মনে করছেন ভাড়া বেশি নিচ্ছি। তাছাড়া ফেরার সময় বাসগুলো ঢাকায় খালি ফেরে, তাই একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে আরকি।
আরও কয়েকটি পরিবহনের কর্মীরাও স্বীকার করেছেন, ঈদ উপলক্ষ্যেই ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। বছরে এই একবারই বেশি ভাড়া নেওয়া হয়।পরিবহনগুলোর এই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, এই বাড়তি ভাড়া আদায়কে অবৈধ বলা যাবে না। কারণ, অন্যান্য সময় পরিবহনগুলো সরকারি ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া নেয়। এখন নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছে, যেটাকে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া মনে করছেন। কিন্তু এটা অতিরিক্ত ভাড়া নয়, এই ভাড়াকে অবৈধও বলা যাবে না।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি টার্মিনালে বিআরটিএর ভিজিল্যান্স টিম কাজ করছে, ম্যাজিস্ট্রেটও রয়েছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার যথাযথ অভিযোগ কেউ নিয়ে এলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।