নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে দেশের ৩০০ নির্বাচনি এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য সোমবার (২০ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতি উপজেলায় একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে এবারের নির্বাচনে প্রত্যেক উপজেলায় পাঁচ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করবেন।ইসি সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ইসির চিঠির সূত্র মতে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচনি এলাকায় ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত অর্থাৎ ৩৭ দিন দায়িত্ব পালন করবেন। এতে প্রায় শতকোটি টাকার মতো ব্যয় হবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে তিনটি ইউনিয়নের জন্য একজন (দুর্গম ও দূরবর্তী ২টি ইউনিয়নে একজন), বড় পৌরসভার ক্ষেত্রে প্রতিটিতে চার জন, প্রতি পৌরসভায় তিন জন করে এবং সিটি করপোরেশনের প্রতি ৪-৫টি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে।
ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের চার হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন, ৩২৮টি পৌরসভা ও ১২টি সিটি করপোরেশনে প্রায় ২৭’শ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের দরকার পড়বে। এত সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একসঙ্গে নিয়োগ করা কতটা সম্ভব, সেটা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ সহকারী সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারাই মাঠ পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। জানা গেছে, বর্তমানে জনপ্রশাসনে এক হাজার ১৬৩ জন সহকারী সচিব ও এক হাজার ৯৬৭ জন সিনিয়র সহকারী সচিব রয়েছে। এই দুই পদে মোট কর্মকর্তার সংখ্যা তিন হাজার ১৩০ জন। এদের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত ৪৯৫ জন ইতোমধ্যে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। এই সংখ্যা বাদে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা থাকে দুই হাজার ৬৩৫ জন। এদের মধ্যে একটি অংশ সচিবালয়ে বিভিন্ন মলালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। আবার কেউ কেউ ছুটি দিয়ে বিদেশে কর্মরত এবং সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও দফতরে প্রেষণে নিযুক্ত রয়েছেন। এসব বাদ দিয়ে দায়িত্ব পালনের মতো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দুই হাজারের কম-বেশি হতে পারে। অবশ্য সরকার চাইলে উপসচিব বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিযুক্ত করতে পারে। বর্তমানে সরকারের এক হাজার ৬৫৮ জন উপসচিব, ৯৩৩ যুগ্ম সচিব, ৩৭১ জন অতিরিক্ত সচিব এবং ২৭ জন গ্রেড-১ ও ৮২ জন সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন।
এদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পেছনে দৈনিক ভাতা, যানবাহনের জ্বালানিসহ প্রতিদিন ৯-১০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে বলে জানা গেছে। সেই হিসাবে ২৭’শ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলে নির্বাচন কমিশনের ৯০ কোটি টাকার বেশি খরচ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহীন আরা বেগম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের চিঠি এখনও আমি দেখিনি। আগে চিঠি দেখি, তারপর তাদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২৭’শ জনের মতো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৩৭ দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়ার সক্ষমতা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের রয়েছে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।