কমছে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি, বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি
ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী বাণিজ্য নীতির প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। মাত্র দুই মাসের ট্রাম্প আমলের নীতিমালা বৈশ্বিক অর্থনীতি বিভক্ত করছে এবং সাম্প্রতিক সময়ের প্রবৃদ্ধির অগ্রগতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে সতর্ক করেছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)।
বিশ্ব অর্থনীতির সাম্প্রতিক হালচাল নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্যারিসভিত্তিক এই সংস্থা চলতি ও আগামী বছরের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর অর্থনীতি এই পরিস্থিতির ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতিনিধি এই সংস্থাটি চলতি বছরের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ দশমিক ১ শতাংশ করেছে। যেখানে ২০২৪ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। ওইসিডির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতি এখনও বড় ঝুঁকির মুখে। অর্থনৈতিক বিভাজন বাড়লে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির গতি কমবে ও মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়বে।
সংস্থাটি আরও বলেছে, বিভিন্ন দেশ যদি তাদের বাণিজ্য সমস্যার সমাধান পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে না খোঁজে, তাহলে পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরও জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, বাণিজ্য নীতির অতিরিক্ত কঠোরতা জীবনযাত্রার মানের ওপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ওইসিডি পূর্বাভাস দিয়েছে, ট্রাম্প যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা প্রায় সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, তবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। একই সঙ্গে এসব দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে গভীর মন্দায় পড়তে পারে মেক্সিকো, যাতে ২০২৫ সালে দেশটির মোট উৎপাদন ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হবে এবং ২০২৬ সালে তা আরও ০ দশমিক ৬ শতাংশ কমবে। এ ছাড়া, কানাডার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ২০২৫ সালের জন্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ২ শতাংশ করা হয়েছে এবং ২০২৬ সালের জন্য পূর্বাভাস ২ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও কমার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে ২০২৫ সালে তা ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২৬ সালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস ২০২৫ সালে ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ২ দশমিক ৩ শতাংশ থাকবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ওইসিডির প্রতিবেদন সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী র্যা চেল রিভস বলেছেন, বিশ্বের বাণিজ্য ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর প্রভাব বিশ্বব্যাপী অনুভূত হচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসির।