করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এ সম্পর্কিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সবাই নির্দেশনা মেনে চলুন। নিজে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি অপরকে সুরক্ষিত রাখুন। এ ভাইরাস যাতে না ছড়ায় সেজন্য সবাই সতর্ক থাকুন।’
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সকালে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোর তুলনায় এখনও বাংলাদেশের অবস্থা ভালো। আমরা করোনার প্রাদুর্ভাব অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। বিশ্বে যেখানে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন সে তুলনায় এ দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যু এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর এই নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখতে সবাইকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। ১৯৭১ সালে পুরো জাতি এক হয়ে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছি। এখনও সেভাবে সবাইকে মনে সাহস নিয়ে এক হয়ে এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘জনকল্যাণ বিবেচনায় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ রয়েছে। কিন্তু জীবন থেমে থাকবে না। যারা বাজারে যাবেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করবেন।’ এ ভাইরাসের কারণে দুর্ভিক্ষ আসতে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা মোকাবিলায় সবাইকে কৃষিতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারও এক খণ্ড জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আমরা যদি খাবার মজুত রাখতে পারি তাহলে দুর্ভিক্ষ আসবে না। মন্দা মোকাবিলা করতে পারবো। সরকার এবার ২১ লাখ মেট্রিক টন ধান, চাল, আটা কিনে মজুত করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। আসছে রমজানে যাতে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের ধান কেটে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা ধান কাটতে অন্য এলাকায় যেতে চান তাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ভাতা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে এক কোটি করা হয়েছে। ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, দুস্থ ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ। ত্রাণ বিতরণে সরকারের পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আবারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগ কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছে। অন্যান্য সংগঠনকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ছাত্রলীগের পাশাপাশি কৃষক লীগ, যুব লীগ শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।’