কল্যাণ তহবিলে কনস্টেবল থেকে কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশের সব কর্মকর্তারা চাঁদা দেবেন: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২৩

সাইফুল ইসলাম:

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, ডিএমপির কল্যাণ তহবিলে এতদিন কনস্টেবল থেকে সাব-ইন্সপেক্টর পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা চাঁদা দিতেন। এখন থেকে কনস্টেবল থেকে কমিশনার পর্যন্ত সব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা চাঁদা দেবেন, কিন্তু আর্থিক সহায়তা পাবেন কনস্টেবল থেকে সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যরা। সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে কল্যাণ তহবিল ব্যবস্থাপনা পরিষদের ৭২তম সভায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় ১৯৬ জন পুলিশ সদস্যের অনুকূলে ৭০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪ টাকার আর্থিক অনুদান মঞ্জুর করা হয়, যা এ যাবৎ কালে কল্যাণ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কর্তব্যরত অবস্থায় আহত ও অসুস্থ পুলিশ সদস্যের চিকিৎসার জন্য এবং নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবারের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ১৯৬ জন পুলিশ সদস্যের অনুকূলে ৭০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪ টাকার আর্থিক অনুদান তুলে দেন ডিএমপি কমিশনার।

আর্থিক অনুদান প্রদান শেষে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি পরিবার। ‘সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’ কবির এ নীতির ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আমাদের এ আর্থিক সহায়তা চলমান থাকবে।

তিনি বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচিতে আমাদের সহকর্মী আমিরুল ইসলাম পারভেজ মারা গেছেন। তাকে আমরা মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পেনশনসহ যা কিছু আছে পৌঁছে দিয়েছি। তার ছোট্ট শিশুকন্যাটি সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিতভাবে (প্রতি মাসে) আর্থিকসহায়তা প্রদান করা হবে। এটি এখন থেকেই চালু করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে কারও যদি এ ধরনের সমস্যা হয় এবং পরিবারের অন্য কোনো অবলম্বন না থাকে তাহলে তাকেও এ ধরনের সুবিধা প্রদান করা হবে।

ডিএমপির অসুস্থ সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ ও রোগ মুক্তি কামনা করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২৮ অক্টোবর আমাদের আরও অনেক সদস্য আহত হয়েছেন।এদের অনেকেই এখন সুস্থতার পথে, নায়েক আব্দুর রাজ্জাক বেশি অসুস্থ। তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে পৃথিবীর যেখানেই তার চিকিৎসার প্রয়োজন সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। এরই মধ্যে এক কোটি টাকা ব্যয়ে ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটুও পিছপা হয়নি। তিনি আমাদের সহকর্মী, তাকে সুস্থ করার জন্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিতে চাই। আমাদের যে পারস্পরিক বন্ধন সম্পর্ক সেটি যেন অটুট থাকে, আরও বেশি মজবুত হয় সে প্রচেষ্টা আমাদের অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ডিএমপি কল্যাণ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কল্যাণ তহবিল, পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের কল্যাণ তহবিল আছে সেখান থেকেও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সবচেয়ে ভালো বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বসেন। এজন্য কারও চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ডিএমপির ব্যবস্থাপনায় সেখানে সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। আপনি (পুলিশ সদস্য) কল্যাণ তহবিলের আর্থিক সহায়তা পাবেন। এছাড়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে ভালো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সেবা পাবেন। প্রয়োজনে তিনি নিজেই কথা বলবেন বলে জানান কমিশনার।

এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যন্ড প্রকিউরমেন্ট) মুহা. আশরাফুজ্জামান, যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার ও বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।