নিজেস্ব প্রতিবেদক:
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ প্রকল্পে যথাযথভাবে কাজ না করে প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা লুটপাটের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল সোমবার দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিনে শ্যামপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে অভিযান চালায়। অভিযানকালে দুদক টিম প্রাথমিকভাবে ১৬ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, শ্যামপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ। রপ্তানির আগে কাঁচাপণ্যের মান যাচাই ও প্যাকিংয়ের সুবিধার জন্য এ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০২১ সালে নেওয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৫৮ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। নিয়মানুযায়ী প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরই অর্থছাড় করার কথা থাকলেও ৩০ হাজার ৬১৭ বর্গফুটের ছয়তলা ভবনের নির্মাণকাজের মাত্র পাইলিংয়ের ক্যাপের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে সিভিল ওয়ার্কের ১২ কোটি টাকার মধ্যে ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মালটিবিজ ইন্টারন্যাশনাল।
এছাড়া ল্যাবরেটরি আধুনিকায়নের জন্য কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজের টক্সিকোলজি ল্যাবে নতুন ১৮টি মেশিন সরবরাহ করার কথা থাকলেও বাস্তবে সরবরাহ করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কার্নেল ইন্টারন্যাশনাল। কাগজপত্রে মেশিন সরবরাহ দেখিয়ে ১১ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে।
শ্যামপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ নামক ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরির লক্ষ্যে ১৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান প্রকল্পের (১) কাজ শেষ হওয়ার না হওয়া সত্ত্বেও অর্থছাড়, (২) টক্সিকোলজি ল্যাবে নতুন ১৮টি মেশিন সরবরাহের নামে অর্থ আত্মসাত্, (৩) সংস্থাটির ১০টি ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় মিথ্যা তথ্য ব্যবহার প্রভৃতি অভিযোগ রয়েছে। অভিযানকালে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ ও রেকর্ডপত্রের প্রাথমিক পর্যালোচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে দেখা যায় ভবন নির্মাণে শুধু পাইলিং নির্মাণের কাজ হলেও দুইতলা পর্যন্ত বিল প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও টক্সিকোলজি ল্যাবের মেশিন সরবরাহ সম্পর্কিত অনিয়মের অভিযোগের সংশ্লেষে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।