কামরাঙ্গীরচরে কাউন্সিলর প্রার্থী দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, ভাংচুর-আগুন

প্রকাশিত: ৮:২১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২০

ঢাকা দক্ষিন সিটি নির্বাচনে ৫৬ নং ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মাঝে দফায় দফায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ও আজ শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন ঘুড়ি মার্কা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সাইদুর রহমান রতন ঠেলা গাড়ী মার্কা প্রতীক নিয়ে আসন্ন ঢাকা দক্ষিন  সিটির ৫৬ নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী গত ১০ জানুয়ারী থেকে প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারনা শুরু করেছেন। কিন্তু ৫৬ নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন নির্বাচনী আচরণ বিধি উপেক্ষা করে একক আধিপত্য বিস্তার করে নির্বাচনী প্রচারনা চালাচ্ছেন।

এই ওয়ার্ডে বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ অনান্য দলের কোন প্রার্থীকে মাঠে নামতে দিচ্ছে না হোসেন বাহিনী। স্থানীয়রা আরও জানান,  বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ অনান্য দলের প্রার্থীরা পোস্টার-ব্যানার লাগানোসহ নির্বাচনী প্রচারনায় বাধা দিচ্ছে কাউন্সিলর হোসেন বাহিনী। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় পৃর্ব রসুলপুর ৪নং গল্লিতে নির্বাচনী পোস্টার লাগাতে যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সাইদুর রহমান রতনের সমর্থকরা।

তখন খবর পেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেনের অনুসারী মোঃ সিরাজ তালুকদার ওরফে বাবা সিরাজ, মহিউদ্দিন মহি, জাবেদ ওরফে সমিতি জাবেদ, আলমগীর, ইমন, ৯নং গলির ফারুক হোসেন ওরফে নোয়াখাইল্ল্যা ফারুক, ৮নং গলি ফেরদৌস ওরফে জুতা ফেরদৌস(কিশোরগঞ্জে হত্যা মামলার অাসামী), শাকিল, ৭নং গলির রনি ও সুমনসহ ২০-২৫ জন ক্যাডার লাঠি সোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে।

এতে স্বতন্ত্র প্রাথী রতনের দুই সমর্থক আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এখবর মূর্হতের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বড়গ্রাম ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ীর সামনে অবস্থা নেয় রতনের লোকজন। খবর পেয়ে সেখানেও হামলা চালায় হোসেনের অনুসারীরা। দু’গ্রুপের ইটপাটকেল নিক্ষেপ আর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় গোটা এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। থেমে থেমে গভীর রাত পর্যন্ত চলতে থাকে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ। এতে উভয় গ্রুপের ৪-৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে রাত ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এ ঘটনার জের ধরে উভয় গ্রুপে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আজ শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে ব্যাটারী ঘাট থেকে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করে রতনের অনুসারীরা। তাদের নির্বাচনী মিছিলটি কুড়ার ঘাট নতুন বিদ্যুৎ অফিসের সামনে পৌছালে হোসেনের অনুসারীরা ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এরপর বিকেল প্রায় ৪ টার দিকে বড়গ্রাম এলাকায় রতনের অফিস ও নির্বাচনী ক্লাবে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর শেষে আগুন জ্বালিয়ে দেয় হোসেন বাহিনী। অপরদিকে নির্বাচনী আচরণ বিধি উপেক্ষা করে আজ সন্ধ্যার পর থেকে পূর্ব রসুলপুর ৮ ও ৯নং গলিতে অর্ধশত দোকান পাট ও রাস্তা বন্ধ করে মঞ্চ বানিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন নির্বাচনী সমাবেশ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ সাইদুর রহমান রতনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ  করা হলে তিনি বলেন, শুরু থেকে আমার নির্বাচনী প্রচারনায় দফায় দফায় বাধা ও হুমকি প্রধান করছেন কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন। গত ১৭ জানুয়ারী থানা রোডে হোসেনের নেতৃত্বে আমার নির্বাচনী মিছিলে হামলা চালায় পারভেজ হোসেন বিপ্লবসহ তার অনুসারীরা। ইতিমধ্যেই হোসেনসহ তার অনুসারীরা আমার অফিস ও ক্লাবে হামলা ও ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কোথাও ব্যানার-পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না। এলাকার ভোটারসহ সাধারণ জনগন আমার প্রতি সমর্থন দেওয়ায় পরাজয়ের আশংকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কাউন্সিলর হোসেনসহ তার ভাড়াটে ক্যাডার বাহিনী। তবে যত বাধাই আসুক নির্বাচন থেকে আমি সরে দাঁড়াবো না। এ ব্যাপারে মোহাম্মদ হোসেনের সাথে কয়েক দফা যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার কয়েকজন অনুসারী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে কামরাঙ্গীরচর থানায় যোগাযোগ করা হলে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ বি এম মশিউর রহমান দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলতে উভয় প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নিদর্শন দিয়েছি। পরিস্থিতি এখনও পুলিশের নিয়ন্ত্রনেই রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে কাজ কারছে পুলিশ।

https://youtu.be/NalhDZogWhQ