গাজীপুরে সৎভাইয়ের ছোড়া পেট্রোলে দগ্ধ স্কুলছাত্রী ও নানি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে সানজিদা আক্তার নামে ১৩ বছরের এক স্কুলছাত্রীসহ তার নানিনে পেট্রোলের আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল রোববার দুপুরে ওই ছাত্রী বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে জেলার সদর উপজেলার বাঘের বাজার শিরিরচালা মিনাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গুরুতর দ্বগ্ধ সানজিদা গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে।সে স্থানীয় হাজী নুরুল ইসলাম মডেল একাডেমির ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। অপরজন ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার কান্ডপাশা গ্রামের ইউনুস তালুকদারের স্ত্রী বেবী বেগম (৫৫)।তিনি সাজিদার নানি।
নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার অর্জনচর গ্রামের সুলতান ফকিরের ছেলে শুভ মিয়া (২০) এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।সে সানজিদার সৎ ভাই।এ ঘটনার সঙ্গে শুভর এক সঙ্গী সাব্বিরও (২৬) জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।শুভ ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাষ্টারবাড়ী এলাকার মৃত গোলাম মোস্তাফার ছেলে।
ঘটনার পর স্থানীয়রা দগ্ধদের উদ্ধার করে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন দগ্ধ নানি-নাতনি।
দগ্ধের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্বগ্ধ সানজিদার বাবা শফিকুল ইসলাম প্রথম স্ত্রী মারা গেলে মোছা. মনিরা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। মনিরা বেগমের প্রথম পক্ষের ছেলে শুভ মিয়া কিছুদিন আগে একটি মেয়েকে নিয়ে শফিকুলের বাড়িতে উঠে। পরে সানজিদা এ ঘটনাটি তার বাবা শফিকুলকে বললে তিনি শুভকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরা বেগমও শফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে চলে যান। এর ১০-১২ দিন পর শফিকুলের দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরা বেগম তালাকনামা পাঠিয়ে দেন।
এদিকে শফিকুল তার বাড়িতে সন্তানদের দেখাশোনার জন্য প্রথম পক্ষের শাশুড়ি বেবী বেগমকে নিয়ে আসেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুভ তার সঙ্গী সাব্বিরকে নিয়ে রোববার দুপুরে সানজিদা বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে শাহজাহানের বাড়ির পশ্চিম পাশে কাঁঠাল বাগানের মধ্যে বোমা সদৃশ্য বস্তুতে পেট্রোল মিশিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে সানজিদার ওপর নিক্ষেপ করে। এ সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন সানজিদার নানি বেবী বেগম। তার ওপরও পেট্রোল নিক্ষেপ করে অভিযুক্তরা।এতে নানি-নাতনি দুজন গুরুতর দগ্ধ হন।
শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, দগ্ধ দুজনেরই অবস্থা আশংকাজনক। তাদের শরীর ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, সানজিদার শরীরে ৫২ শতাংশ ও বেবির শরীরের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের দুজনেরই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আশংকাজনক অবস্থায় সানজিদাকে আইসিইউতে আর বেবিকে ফিমেল এইচডিইউতে ভর্তি রাখা হয়েছে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহতাব উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব আমরা।