সাইফুল ইসলাম:
রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে চোরাই আইফোন ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-উত্তরা বিভাগের একটি দল। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিপুল সংখ্যক চোরাই আইফোন ও ল্যাপটব উদ্ধার করা হয়েছে। এরা হলেন- মো. মনির হোসেন, জহির হোসেন, মো. সুরুজ হোসেন, রকি, রাজন আহমেদ, মো. রাসেল ও মো. তানভির আহম্মেদ। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, গত ১৮ নভেম্বর ভুক্তভোগী স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য স্কয়ার হাসপাতালে গেলে সেখানে রিসিপশন থেকে তার আইফোন, এনআইডি কার্ড ও ব্যাংকের তিনটি কার্ড চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা টিম। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুত্তির সহায়তায় চুরির ঘটনায় জড়িত চোরদের শনাক্ত করা হয়। এরপর রাজধানীর পরীবাগ ও হাতিরপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৫টি আইফোন, একটি অন্য ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, ২১টি আইফোনের বডি, ৯৭টি মাদারবোর্ড ও এক রোল সিলভার কালার ফয়েল পেপার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতাররা চোরাই মোবাইল ফোন বিশেষ করে আইফোন ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে চোরাই আইফোন ক্রয়-বিক্রয়, লক খোলা ও পার্টস আলাদা করে বিক্রি করে আসছে।
গ্রেফতারদের অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ডিবিপ্রধান বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল চোরেরা আইফোনগুলো চুরি করে চোরাই আইফোন ক্রেতার কাছে বিক্রি করতো। চোরাই আইফোন ক্রেতারা আবার আইফোনগুলো বড় পার্টির কছে বিক্রি করতো। আইফোন হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে তা বন্ধ থাকলেও আইফোনের মালিক ডিভাইসের গতি-প্রকৃতি বা লোকেশন কোথায় আছে তা বুঝতে পারে। বড় পার্টির সদস্যরা চুরি করা আইফোনগুলোর গতি-প্রকৃতি বা লোকেশন যাতে না জানা যায় এজন্য সিলভার কালারের ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে রাখতো। এরপর তারা আইফোনগুলো ল্যাপটপে ফ্লাশ দিয়ে ডাটা মুছে ফেলে মার্কেটে বিভিন্ন পার্টির কাছে বিক্রি করে দিতো।
জানা যায়, আইএমইআই পরিবর্তন করতে না পারায় ও আইফোনের খুচরা পার্টসের চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় গ্রেফতাররা আইফোনের যন্ত্রাংশ খুলে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করে দিতো এই চক্রটি। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।