ছাত্র-জনতার ওপর হামলা: মাস্টারমাইন্ডসহ চিহ্নিত ১৪৪ জনের কী শাস্তি হবে
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ১৪৪ জন শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারী চিহ্নিত হয়েছেন।
গত বছরের ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপর নৃশংস হামলা, বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের সামনে এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টার সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) বিএসএসএমইউ শাখার সভাপতি, মহাসচিবসহ স্বাচিপের অন্য নেতা ও সদস্য এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা রয়েছেন।
এসব শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চার ধরনের অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। এর মধ্যে কেবিন ব্লকের সামনে একজন ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিলেন ১৬ জন, ছাত্র-জনতার সঙ্গে মারামারিতে জড়িত ছিলেন ২৫ জন শিক্ষক, চিকিৎসক এবং ৮০ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নেপথ্যে থেকে এ ঘটনার নেতৃত্বদান ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন ২৩ জন। শেষের ২৩ জনকে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪তম সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটির এই প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় এই ১৪৪ জনকে প্রথমে সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি তাদের অপরাধের ধরণ অনুযায়ী শাস্তি নির্ধারণ করবে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলায় অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করা না হলেও নথি হিসেবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে একই ঘটনায় অভিযুক্ত ১৫ চিকিৎসক-নার্স-কর্মকর্তা কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মামলার বাদী হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটি তদন্ত কমিটি করেছে। সে কমিটির রিপোর্ট আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টে মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করেছি। ৪ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার ভিডিও চিত্র পাওয়া গেছে। মারামারি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ৩০-৩৫টি গাড়ি-অ্যাম্বুলেন্স জ্বালানো হয়েছে এবং বিভিন্ন অফিসে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে মামলা করা হয়েছে। বাকিটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
প্রক্টর আরও বলেন, দুই ধরনের শাস্তি পাবেন তারা।
কী ধরনের শাস্তি পাবেন তারা
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই।
অপরাধের ধরন অনুযায়ী চাকরিচ্যুতি, পদাবনতি, ইনক্রিমেন্ট কাটা হতে পারে ও তিরস্কার পেতে পারেন। মামলার ফলে অভিযুক্তরা আসামি হলে তাদের চাকরি এমনিতেই থাকবে না। পুলিশ যদি তদন্ত কমিটির তালিকা আমলে নেয়, তাহলে সবাই সাময়িক বরখাস্ত হবেন।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, থানা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিহ্নিত ২৩ জনকে বেশি আমলে নিয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নেওয়া হবে