প্রায় জনশূন্য ঢাকা আর মাস্ক ব্যবহারের সুবিধা নিয়ে রাজধানীতে অপরাধ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে নগরবাসী। বিশেষ করে দোকানিরা রয়েছে চুরি আতঙ্কে। তবে পুলিশ বলেছে, মহানগরীতে সার্বক্ষণিক পুলিশ টহলে রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় কর্মরত নিরাপত্তাকর্মী ও নাইট গার্ডদের সঙ্গে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ। এই কয়দিনে অপরাধ প্রবণতাও হ্রাস পেয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত দুদিন ধরে কার্যত ঢাকা অচল। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সুনসান নীরবতা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বৃহস্পতিবার কাউকে বের হতে দেখা যায়নি। কেউ বের হলেও তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। খালি সড়কে কোথাও কোথাও দু-একটি রিকশা দেখা গেছে। এমন জনশূন্য ঢাকায় অপরাধী ও মাদকসেবীরা অপরাধ করতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি হওয়ার আশঙ্কা করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।
মিরপুরের ২ নম্বরে মোবাইল ফোনের ব্যবসা করেন জালাল আহম্মেদ। স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশে তার একটি ছোট্ট দোকান আছে। তিনি বলেন, ‘দোকানে আমি একাই বসি। তবে গত ৩ দিন ধরে দোকান বন্ধ। আমার বাসা শিয়াল বাড়ি। সেখান থেকে এসে দিনে একবার দোকান দেখে যাই। সবার দোকানই বন্ধ। একজন নিরাপত্তাকর্মীও আছেন। তবে শহরের যে অবস্থা তাতে ভয় লাগে। তাই কিছু মোবাইল বাসায় নিয়ে রেখেছি। ’ তিনি বলেন, ‘এখন সবার মুখ আটকা। কে কখন কিভাবে চুরি করবে ঠিক নেই। মাদকসেবীরা দোকানের শাটার ভেঙে ফেলতে পারে ।’
আদাবর থানার শেখের টেক এলাকায় ইলেকট্রিক পণ্যের একটি দোকান আছে শাহজালাল নামে এক ব্যবসায়ীর। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি দোকান বন্ধ রেখেছেন। তবে সড়কে মানুষ চলাচল না থাকায় তিনি চিন্তিত। দোকানে চুরি হয় কিনা সে আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি। শাহজালাল বলেন, ‘এখন রাত দিন সমান। সবাই নিজেদের জীবন নিয়ে চিন্তিত। কোথায় কী হচ্ছে তা কেউ খবর নেবে না। দোকান কেউ তুলে নিলেও মানুষ বাইরে বের হবে না।’
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, সব এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ টহল রয়েছে। এরমধ্যে কোনও অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সুযোগ নেই। সন্দেহভাজন কাউকে মাস্ক পরা দেখলে তাদের জেরার মুখে পড়তে হবে। ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাজধানীতে গত কয়েকদিনে অপরাধ হ্রাস পেয়েছে। অপরাধ সংঘটিত হতে হলে ভিকটিম, স্থান ও সময় প্রয়োজন। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি নেই। আমাদের পুলিশ ২৪ ঘণ্টা কাজে করছে।’