![টাঙ্গুয়ার হাওরে ৪০ হাজার জলজ বৃক্ষ রোপণ করলো শিক্ষার্থীরা](https://www.newspostbd.com/wp-content/uploads/2025/02/25-8.webp)
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিলেট বন বিভাগের উদ্যোগে ও তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় টাঙ্গুয়ার হাওরে ৪০ হাজার জলজ বৃক্ষ হিজল ও করচ রোপণ করেছে শিক্ষার্থীরা। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং হাওরপারের গ্রামগুলোকে ঢেউয়ের আঘাত থেকে সুরক্ষা দিতে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
বুধবার টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন এলাকায় ৬৫ একর জমিতে এ বৃক্ষরোপণ ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয় তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, মোয়াজ্জেমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, বনায়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং জলজ প্রতিবেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে। পাশাপাশি দুর্যোগ প্রশমন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স সার্ভিসেস (সিএনআরএস) এর সুনামগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারী ইয়াহিয়া সাজ্জাদ বলেন, হাওর এলাকায় হিজল ও করচ গাছ রোপণের জন্য স্থানীয়দের দীর্ঘদিন ধরে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বর্ষার পানির ঢেউয়ে এই গাছের কোনো ক্ষতি হয় না এবং এগুলো বাড়তে কোনো রাসায়নিক সার প্রয়োজন হয় না, যা পরিবেশবান্ধব একটি সমাধান।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম বলেন, পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার কারণে টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ ক্ষতির মুখে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি, যাতে তারা পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারে।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ রক্ষায় বনায়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে এবং চলতি বছর ৪০ হাজার জলজ বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করার মূল উদ্দেশ্য হলো তারা যেন এসব গাছের যতœ নেয় এবং পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সচেতন হয়। প্রয়োজনে প্রতিটি গাছে শিক্ষার্থীদের নামসংবলিত নেমট্যাগ লাগানো হবে, যাতে তারা গর্ব করে বলতে পারে—এ গাছটি আমি লাগিয়েছি।
বনায়ন প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হবে, জলজ প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, পাখির নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি হবে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।