টিকেটের উচ্চ মূল্যের কারণে পরিবারের সাথে ঈদ করতে পারছেন না অনেক রেমিট্যান্স–যোদ্ধা

প্রকাশিত: ৮:৩০ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২৩

ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি, প্রিয়জনের সাথে এ খুশি ভাগাভাগি করে নিতে চেয়েও পারেন না অনেক রেমিট্যান্স–যোদ্ধা। প্রবাসে যারা আছেন তার অধিকাংশই মধ্যম আয়ের, যারা বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষায় থাকে ঈদের সময়টুকু অন্তত পরিবার পরিজন-আত্মীয় স্বজন প্রিয় মানুষদের নিয়ে আনন্দ উপভোগ করবে বলে, কিন্তু সকল আাশাই দূরআশায় পরিণত হয়ে যায় যখন যাতায়াতের খরচ আকাশচুম্বী হয়ে দাঁড়ায়।

বিমানের টিকেটের উচ্চ মূল্যের কারণে ঈদুল আজাহায় এবার অনেক রেমিট্যান্স–যোদ্ধা বাংলাদেশি দেশে যেতে পারছেন না।ঈদের ছুটি পেয়ে অনেকে পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ কাটানোর ইচ্ছা থাকলেও টিকেট কেনার সাধ্য না থাকায় তাদের সেই ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না।


সংযুক্ত আরব আমিরাত বা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আবারো এয়ারলাইন্স টিকিটের উচ্চ মূল্যে প্রবাসীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে টিকিটের চরম মূল্যের কারণে ঈদের ছুটি পেয়েও দেশে যেতে পারছে না হাজারো প্রবাসী। বাংলাদেশ বিমানের উপর প্রবাসীদের আস্তা ও প্রত্যাশা থাকলেও সবচেয়ে বেশি মূল্য এখন দেশীয় বিমান সংস্থাটির। তাই দেশে যেতে প্রত্যাশী প্রবাসী বাংলাদেশীরা টিকেট কিনতে না পেরে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন।

অনেক প্রবাসী এবার ঈদে দেশে যেতে পারছেন না
স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্সিগুলো জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্য প্রাচ্যের বেশিরভাগ প্রবাসী রোজার ঈদে- কোরবানির ঈদে,শীতের সময়েই দেশে বেশি যেতে চাই। এ দুটি ঈদ এবং শীত মৌসুমকে ঘিরে ট্রাভেল টিকিট ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করে থাকেন। কিন্তু এই সময়ে টিকিটের উচ্চ মূল্য থাকার কারণে সাধারণ প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণে তারা ব্যর্থ হন। তাছাড়া আগে ভাগে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় এই সময়ে ব্যবসায়িকভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা জানান, বর্তমানে টিকেটের আসা যাওয়ার মূল্য তিন থেকে চার হাজার দিরহামে বিক্রি হচ্ছে। কোন কোন সময় একটু কমলেও পুনরায় তা আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা বাংলাদেশী টাকায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার উপরে।

সিঙ্গেল টিকেট এয়ারলাইন্স অনুপাতে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা মধ্যম আয়ের প্রবাসীদের নাগালের বাইরে।

 

এমনিতেই এসব প্রবাসীরা পরিবারের নানান খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এক প্রবাসী দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছেন ‘ভাই আমি সকল প্রবাসীর মনের কথা বলছি, একজন প্রবাসীকে তার পরিবারের জন্য কত কিছুর যোগান দিতে হয়, যেমন, ঈদের কেনাকাটা, কোরবানির কোরবানির পশুর চড়া দাম, সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন, পরিবারের নানান চাহিদা পূরণ থেকে নিয়ে আরো কত কী। একজন প্রবাসীর দেড়-থেকে দূ বছরেরও বেশি সময় লাগে দেশে যাওয়ার প্ল্যান করতে করতে। যাওয়া-আসা খরচ, দেশের মাটিতে নিজের খরচ, আবার আত্মীয় স্বজনসহ সবার জন্য বিদেশ থেকে কেনাকাটা করে নেওয়া, অনেকের দেশে গিয়েও কেনাকাটা করে দিতে হয় পরিবারকে। এসব প্রবাসী কী চান? সামান্য টিকেটের মূল্য হ্রাস করা বা ইয়ারপোর্টে-নিজ দেশে তাদেরকে একটু সম্মান দেওয়া, গৌণ এসব চাওয়া পর্যন্ত দেখার কেউ নাই, মুলত প্রবাসীদের কষ্ট কেউ বুঝতে চান না।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে কোনো কোনো ট্রাভেল এজেন্সি বলছেন, ঈদের আগে বাংলাদেশ বিমানের কোনো টিকিট নেই । তবে দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে ট্রাভেলস এজেন্সিগুলো বলছেন ভিন্ন ভিন্ন কথা যে উৎসবের মৌসুমগুলোতে দাম এমনিতেই মুল্য চড়া থাকে তার উপর হজ্বের জন্য এয়ারলাইন্স স্বল্পতাতো আছেই।
বাংলাদেশ বিমান দুবাইয়ের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সাকিয়া সুলতানা বলেন, এই সময় টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে। ঈদের আগে আমিরাত থেকে বিজনেস ও ইকোনোমি ক্লাসের সব টিকিটই বুকিং হয়ে গেছে। অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার ইচ্ছে থাকলেও হজের জন্য তা সম্ভব হয়নি।

এতে অনেক প্রবাসী দেশে ফেরার পরিকল্পনা বাতিল করছেন। কেউ কেউ বাতিল করেছেন ছুটির আবেদন। এমন অবস্থায় ঈদ বা উৎসব আয়োজনে বিমান টিকিটের মূল্য হ্রাস ও পর্যাপ্ত ফ্লাইট সুবিধা দেওয়ার দাবি করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
প্রবাসী বাংলাদেশীরা জানান, করোনাকালের পরে আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যে হারে বিমান ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তা নজিরবিহীন। বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানের টিকিটের দাম বেশি থাকায়, অন্যান্য বিমান সংস্থাও অস্বাভাবিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করে দিয়েছে। ফলে অনেকের দেশে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও টিকেট কেনার স্যাধ্য না থাকায় ঈদ উদযাপনের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে।