টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সামরিক কমান্ডার হাফেজ নুর মোহাম্মদ (২৮) ও তার আরও ৫ সহযোগীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- ধলা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হোসেন জোহার (৩০), ওবায়দুর রহমানের ছেলে মো. ফারুক ওরফে হারেস (২৩), জেবর মলুকের ছেলে মনির আহাম্মদ (৩৬), অলি আহাম্মদের ছেলে নূর ইসলাম (২৯) ও হোসনের ছেলে মো. ইয়াছিন (২১)। আজ শনিবার (২২ জুলাই) কক্সবাজারে র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার (২১ জুলাই) উপজেলার বাহারছড়ার শামলাপুর এলাকার দূর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার সামরিক কমান্ডার ও তার সহযোগীসহ মোট ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সাত পয়েন্ট ৬৫ এমএম পিস্তল, একটি বিদেশি রিভলবার, একটি শটগান, চারটি দেশীয় এলজি, তিনটি দেশীয় রামদা ও গোলাবারুদসহ নগদ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকায় আরসাসহ বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ খুন-অপহরণ, ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে ভীতির সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় ক্যাম্পে শৃঙ্খলা ফেরাতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ায় র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে টেকনাফ বাহারছড়া শামলাপুর পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরসার সামরিক কমান্ডার হাফেজ নুর মোহাম্মদকে ছয় সহযোগীসহ আটক করা হয়।
তিনি বলেন, হাফেজ নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়িসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, অপহরণ, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৫ টি মামলা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা খুন ও অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আরসার সামরিক শাখার প্রধান ওস্তাদ খালেদের কাছ থেকে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ ও আরসার মূল সংগঠক আরিফ উদ্দিন প্রকাশ হাসেম প্রকাশ কুইল্লার কাছ থেকে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি আরসার অন্যান্য সদস্যদের কুংফু ও বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন হাফেজ নুর মোহাম্মদ। তার নেতৃতে ৩০-৩৫ জন আরসা সদস্য কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প ও তার আশপাশের এলাকা বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ আশেপাশের এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সাধারণ রোহিঙ্গা সহ আশপাশের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিসহ গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান খন্দকার আল মঈন।