সেলিনা আক্তার:
‘ডিজিটাল ব্যাংক’ কোনো শাখা, উপশাখা, এটিএম বুথ ছাড়াই পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর চলবে। থাকবে না সশরীরে লেনদেনের কোনো ব্যবস্থা। মোবাইল আর ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারে গ্রাহকদের দেবে ব্যাংক সেবা।
এই ব্যাংক-এর লাইসেন্সের জন্য লাগবে ১২৫ কোটি টাকা, পরিচালক হতে লাগবে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা। নতুন ধারার এ ব্যাংক চালু করতে আগ্রহীদের আবেদন নিতে নতুন ওয়েব পোর্টালও খোলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠানও আবেদন করেনি। তাই সময় বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক, ডিজিটাল ব্যাংকের ওয়েব পোর্টাল খোলার পর এখন পর্যন্ত কেউ আবেদন করেনি। তবে অনেকে ইউজার আইডি খুলেছে। অনেকে যোগাযোগ করে সময় বাড়াতে রিকোয়েস্ট করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে আজ রোববার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদনের লক্ষ্যে সব আবেদনকারীর পূর্ণাঙ্গ ও মানসম্মত প্রস্তাবনা তৈরি এবং বিভিন্ন দলিলাদি সংগ্রহের বিষয়টি বিবেচনা করে আবেদনপত্র দাখিলের সময়সীমা ১৭ আগস্ট ২০২৩ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে গত ২০ জুনের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির অন্যান্য শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে।
গত ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ‘ডিজিটাল ব্যাংক’ চালুর অনুমোদন দেয়। ১৫ জুন এ বিষয়ে নীতিমালা জারি করে। এরই ধাবাহিকতায় ‘ডিজিটাল ব্যাংক’ – এর জন্য অনলাইনে আবেদন জমা দিতে গত ২১ জুন একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবেদনের জন্য ৪২ দিন উন্মুক্ত থাকবে। ১ আগস্টের মধ্যে আগ্রহীদের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ আবেদন করেনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতানুগতিক পদ্ধতিতে কাগুজে নথি জমা দিয়ে নয়, ডিজিটাল পদ্ধতিতেই ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করতে হবে। অর্থাৎ প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র ডিজিটাল উপায়েই জমা দিতে হবে। আবেদন ফি হবে পাঁচ লাখ টাকা, যা অফেরতযোগ্য। আর এই ব্যাংক খুলতে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা।
নীতিমালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ডিজিটাল ব্যাংকের কোনো শাখা, উপশাখা, এটিএম বুথ বা কোনো স্থাপনা থাকবে না। মোবাইল বা অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহকরা লেনদেন করতে পারবেন। তাদের সশরীরে ব্যাংকের কোনো শাখায় যেতে হবে না। ব্যাংক কোম্পানি আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী এ ব্যাংক চলবে।
নীতিমালায় বলা হয়, ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের মূলধন সংরক্ষণ চুক্তি করতে হবে। কোনো ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়লে তা উদ্যোক্তাদের জোগান দিতে হবে। ঋণখেলাপি কেউ ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। এমনকি ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের কারও বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপি সংক্রান্ত কোনো মামলা আদালতে চলমান থাকলে তারা আবেদন করার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।