মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীঞ্জের চর মুক্তারপুরের কাছে ধলেশ্বরী-শীতলক্ষ্যা মোহনায় জলদস্যুর কবলে পড়েছে ফার্নেস ওয়েল ভর্তি একটি জাহাজ। এ সময় জাহাজের মাস্টারসহ কর্মীদের প্রায় ১১ ঘণ্টা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৩ লাখ ৬৫ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল লুটের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গাজীপুর যাওয়ার পথে এমভি বি জামান-১ নামের ওই জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এসময় অস্ত্রের মুখে জাহাজের কর্মীদের ইঞ্জিন রুমে জিম্মি করেন জলদস্যুরা। সবশেষ প্রায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল লুটের পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মেঘনা সেতুর কাছাকাছি জাহাজটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। লুট হওয়া ফার্নেস অয়েলের মূল্য আনুমানিক ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
জাহাজের কর্মীরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে জাহাজটি গাজীপুর যাওয়ার পথে মোড় ঘুরানোর সময় ওই এলাকা থেকে স্থানে একটি ট্রলারে চড়ে হানা দেয় জলদস্যুরা। সবার মুখে ছিল জমটুপি (মুখ ঢাকার কালো মুখোশ)। মুহূর্তেই জাহাজে উঠে পড়ে তারা। মাস্টারসহ জাহাজে থাকা ৬ জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোবাইল ফোনসহ সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে ইঞ্জিন রুমে আটকে রেখে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় জলদস্যুরা। পরে জাহাজটিতে থেকে থাকা ৩ লাখ ৬৫ হাজার ফার্নেস অয়েল লুট করে নেয়। সবশেষ রাত সাড়ে ৭টার দিকে মেঘনা সেতুর কাছে জাহাজটি ফেলে রেখে ট্রলার করে পালিয়ে যায়। জাহাজটি কিং ফিশার শিপিং কোম্পানির মালিকাধীন এবং লুট হওয়া ফার্নেস অয়েল সামিট গ্রুপের ।
জাহাজ মাস্টার সাইজুল ইসলাম বলেন, নারায়ণগঞ্জের সামিট পাওয়ার থেকে ফার্নেস ওয়েল গাজীপুরের সামিট পাওয়ারে নেয়ার জন্য শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে রওনা হন। জাহাজ ছাড়ার অল্প সময়ের মধ্যেই ডাকাতরা হানা দেয়। প্রথমে মুখোশ পড়া ছয়জন ডাকাত জাহাজে উঠে। তাদের কাছে বড় রাম দা সহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। তাদের মুখে “ডালিম” নামটি শোনা যায়।
মুক্তারপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ লুৎফর রহমান রাত ১টায় জানান, ঘটনাস্থল অনুযায়ী সবশেষ সিদ্ধান্ত মোতাবেক মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
কিং ফিশার শিপিং কোম্পানির ম্যানেজার ফজল আহম্মেদ বলেন, হঠাৎ জাহাজের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যোগাযোগ করতে না পেরে পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়। মোবাইল ট্র্যাকিং করে জাহাজের অবস্থান মেঘনা সেতুর কাছাকাছি জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রলার করে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
মুক্তারপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল অনুযায়ী সবশেষ সিদ্ধান্ত মোতাবেক মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। যারাই জড়িত থাকুক না কেন আইনের আওতায় আনা হবে।