জেলা প্রতিনিধি,নড়াইলঃ
নড়াইলে ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে ইতি বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার গোবরা দক্ষিণপাড়া এলাকায় ভাড়াটিয়ার ঘরের খাটের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।নিহত ইতি বেগম গোবরা গ্রামের হাফেজ মো. শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। নড়াইল সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতি বেগমের স্বামী হাফেজ শফিকুল ইসলাম জেলার লোহাগড়া উপজেলার একটি মাদরাসায় চাকরি করার সুবাদে সেখানেই থাকতেন। মাঝেমধ্যে ছুটিতে বাড়িতে আসতেন। ফলে অধিকাংশ সময় নিঃসন্তান ইতি বেগম একাই থাকতেন বাড়িতে। এর মধ্যে প্রায় এক বছর আগে কাজের সন্ধানে পরিবার নিয়ে বাগেরহাটের ফকিরহাট থেকে আসা মনিরুল মোল্যা নামের এক দিনমজুরকে বাড়ির একটি ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন হাফেজ শফিকুল ইসলাম। মাস দুয়েক আগে ভাড়াটিয়া মনিরুল তার পরিবারকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। গত ১৮ এপ্রিল নিহতের স্বামী হাফেজ শফিকুল ইসলাম ছুটি কাটিয়ে নিজ বাড়ি থেকে কর্মস্থলে চলে যান। এরপর ১৯ এপ্রিল ইতি বেগম ও তার ভাড়াটিয়া মনিরুলের ঘরে তালা ঝুলতে দেখেন প্রতিবেশীরা। বিষয়টি প্রতিবেশীরা ইতির স্বামী শফিকুলকে জানালে তিনি ভাবেন তার স্ত্রী গ্রামের কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে হয়ত বেড়াতে গেছেন। এর আগেও অনেকবার ইতি এভাবে বেড়াতে যাওয়ায় তার স্বামী এ নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করেননি। কিন্তু ২১ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে ইতির ভাড়াটিয়া মনিরুলের ঘরের ভেতর হতে দুর্গন্ধ বের হলে প্রতিবেশী ও স্থানীয় লোকজন ইতির স্বামী এবং থানায় খবর দেয়। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘরের দরজার তালা ভেঙে খাটের নিচ থেকে ইতি বেগমের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম বিলাপ করতে করতে জানান, সন্তান না হলেও স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কমতি ছিল না। কখনো স্ত্রীকে তিনি একটা টোকাও দেননি। কিন্তু বিশ্বাস করে বাড়িতে জায়গা দেওয়া ভাড়াটিয়া মনিরুল তার স্ত্রীকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে বাড়ি লুট করে চলে গেছে। মনিরুলের ফাঁসি চান তিনি।
এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত হাসুয়া আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা পক্রিয়াধীন এবং সন্দেহ তালিকায় থাকা ভাড়াটিয়া মনিরুলকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের পর হত্যার প্রকৃত কারণ জানা জানা যাবে।