নতুন পরিচয়ে স্কারলেট

প্রকাশিত: ১:১১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক:

 

হলিউড ২০০৩ সালেই লালগালিচায় স্বাগত জানিয়েছিল অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসনকে। ‘লস্ট ইন ট্রান্সলেশন’ সিনেমার মাধ্যমে তখন মাত্র ১৮ বছরের এক তরুণী সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন বিশ্বজুড়ে। নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া স্বর্ণকেশি সেই রহস্যময়ী স্কারলেট দ্রুতই পরিণত হন বড়পর্দার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক মুখে। ২২ বছরের অভিনয় জীবনে তিনি শুধু দর্শক নন, সমালোচকদের মনও জয় করেছেন বারবার। হলিউডের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের নানা দেশের দর্শকের কাছেও তিনি এখন পরিচিত এক নাম। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিনির্ভর চলচ্চিত্রে নতুন প্রজন্মের অন্যতম প্রতিনিধিত্বশীল মুখ তিনি। একসময় যে মেয়েটিকে দেখা যেত কেবল বোকাসোকা হাসি আর লাজুক চাহনিতে, আজ তাঁর চোখেমুখে দেখা যায় দৃঢ়তা, সাহস আর সংগ্রামের দীপ্তি। বয়স এখন ৪০। বহুবার উঠে এসেছেন বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের তালিকায়। পারিশ্রমিকের দৌড়ে তিনি অনেক আগেই টপকে গেছেন অন্যান্য নারী তারকাকে।

২০২৫ সালের ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব যেন তাঁর ক্যারিয়ারের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এই মর্যাদাপূর্ণ আসরে স্কারলেট শুধু অভিনেত্রী নন, পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবেও উপস্থিত হয়েছেন। তাঁর এই –বহুমাত্রিক উপস্থিতি এক প্রতীকী দৃষ্টান্ত–নারীশিল্পীর নিজের অবস্থান গড়ে তোলার সাহসী যাত্রা। এবারের আসরে ওয়েস অ্যান্ডারসনের তারকাবহুল সিনেমা দ্য ফিন্যান্সিয়াল স্কিম প্রতিযোগিতা বিভাগে জায়গা পেয়েছে। স্কারলেট এখানে অভিনয় করেছেন বেনিসিও দেল তোরো ও টম হ্যাংকসের সঙ্গে। অন্যদিকে, পরিচালক হিসেবে তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা এলেনর দ্য গ্রেট স্থান পেয়েছে ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে। এ সিনেমার গল্প লিখেছেন তিনি এবং প্রযোজনার দায়িত্বেও ছিলেন। সিনেমাটিতে উঠে এসেছে নারীর মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক সম্পর্ক ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির প্রশ্ন।

নারী নির্মাতাদের যে অগ্রযাত্রা বিগত দশকে ধীরে ধীরে গতি পাচ্ছে, স্কারলেটের এই অভিষেক সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। বহু বছর ধরে, নারীরা চলচ্চিত্র পরিচালনায় পূর্ণ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাই যখন একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী পরিচালনায় আসেন, তা হয়ে ওঠে অন্য নারীর জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। এক সাক্ষাৎকারে স্কারলেট বলেন, ‘আমার অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল নিজস্ব গল্প বলার। অভিনয়ের বাইরেও, ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে আমি এক নতুন স্বাধীনতা অনুভব করছি।’

দু’বার অস্কারে মনোনীত হয়েছেন এই ‘হলিউড সুন্দরী’। তাঁর অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে বারবার। তবুও এত বছর সিনেমা জগতে কাটিয়ে একটি আক্ষেপ রয়ে গেছে তাঁর–যে ধরনের অভিনয় করতে চেয়েছিলেন, সেভাবে সুযোগ পাননি। কারণ, শুরু থেকে হলিউড তাঁকে দেখেছে যৌনতার প্রতিমূর্তি হিসেবে। তাঁর কাছে মূলত এমন চরিত্রে প্রস্তাব এসেছে, যেখানে রূপই মূল নিয়ামক। তিনি বলেন, ‘হলিউড দীর্ঘদিন ধরে নারীর শরীরকেই মুখ্য করে দেখেছে। আমি শুনেছি, মেরিলিন মনরোর মতো অনেক অভিনেত্রীকে এ দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হতে হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা শুনে আমি সবসময় একটু সতর্ক থেকেছি।’ তবুও কাজ নিয়ে তাঁর ভালোলাগা, ভালোবাসা এবং নিজের গল্প বলার এই নতুন যাত্রা–সবকিছু মিলিয়ে স্কারলেট জোহানসনের এই পর্ব যেন এক নারীর শিল্পী হয়ে ওঠার অনন্য দলিল।

 


আরও পড়ুন  

আসলে প্রত্যেক মানুষই শিল্পী : নওশাবা জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদের ক্যারিয়ারটা শুরু হয়েছিল খুব সম্ভাবনা নিয়ে। নাটক, টেলিফিল্ম-বিজ্ঞাপনচিত্র থেকে শুরু করে সিনেমায় অভিনয় করেও নজর কেড়েছেন তিনি।এক সাক্ষাৎকারে নওশাবা বলেন, ‘যেকোনো পারফরমেন্সই যেকোনো আর্ট ফর্মেই ভীষণভাবে আমাকে আন্দোলিত করে এবং আনন্দ দেয়। প্রত্যেকটি মানুষই আসলে শিল্পী এবং যখন আমি দেখি সেটা স্টেজে বিভিন্ন পথনাটকে সেটা মানে চলচ্চিত্রের পর্দায় সেই প্রকাশটা হওয়াটা খুব জরুরি।’ ‘এই সময়ে বাংলাদেশে সংস্কৃতির চর্চা যত বেশি হবে সেটা আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যাওয়াকে অনেক অনেক ত্বরান্বিত করবে। সেটা মানসিকভাবেও হবে এবং আমাদের ভেতরে এতদিনের চাপা অভিমান কষ্ট এবং আমরা জুলাই আন্দোলনে যা ফেস করেছি।’তার কথায়, ‘প্রত্যেকটি মানুষের ভেতরে এক ধরনের একটা অনিশ্চয়তা আস্থাহীনতা এবং ট্রমা কাজ করেছে সেইটার আসলে একভাবেই সম্ভব সেটা হচ্ছে যত বেশি আপনি নাচ গান নাটক ফ্যাশন শো কবিতা লেখা গানের সৃষ্টি হবে তত বেশি এ জাতি আস্তে তাদের আস্থাটা ফিরে পাবে।’অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘আমি নিজে চারুকলায় পড়াশোনা করেছি, পেইন্টিং এ মাস্টার্স করেছি এরপরে এতকাল ধরে যে অভিনয় করছি থিয়েটার পাপেট আমার কাছে মনে হয় যে আমি ব্যক্তিগতভাবে যতবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি সেটার একমাত্র শক্তি হিসেবে চালিকা কাজ করেছে।’ শেষে বলেন, ‘আমার আর্টিস্টিক সত্তা আমার সংস্কৃতির চর্চা সেইটা যখন আরো বড়ভাবে দলীয়ভাবে হয় সেরকম সেটা খুব দারুণভাবে হয় এবং সেটার মানে একেবারে তীর্থস্থান হচ্ছে শিল্পকলা স্টেজ।’