পল্লবীতে শাহীন হত্যায় সাবেক এমপি আউয়ালের বিরুদ্ধে মামলা পুনরায় তদন্ত করবে সিআইডি

প্রকাশিত: ৪:৪৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর পল্লবীতে সন্তানের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে শাহিন উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যা মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে পিআইবি। এই সম্পূরক চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেন নিহতের মা ও মামলার বাদী আকলিমা বেগম। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্ত করে আগামী ১৪ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে নারাজি দেন মামলার বাদী। আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্ত করে ১৪ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।


এর আগে ১২ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে মামলার সম্পূরক চার্জশিট গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলার বাদী আকলিমা বেগম ফের নারাজি দেবেন বলে সময়ের আবেদন দাখিল করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৩ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেন। তারও আগে ১৭ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় ল²ীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে এ সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশের পরিদর্শক মনির হোসেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তাহের, সুপন বেপারী, মুরাদ, টিটি শেখ ওরফে টিটু, গোলাম কিবরিয়া খান, ইব্রাহিম সুমন ওরফে বাওয়া সুমন, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক, রকি তালুকদার ওরফে রকি, নুর মোহাম্মদ হাসান মোতাইত, ইকবাল হোসেন ওরফে ইতবাল নুর, শরিফ, তৌরিকুল ইসলাম ওরফে ইমন, তুহিন মিয়া, হারুন অর রশীদ ওরফে হারুন ও প্রতীক আহম্মেদ সজীব।
গত ২০২২ সালের ফেব্র“য়ারিতে এ মামলায় ল²ীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন। এরপর মামলার বাদী নারাজি দেন। গত ২০২২ সালের ১২ মে আদালত শাহিন উদ্দিনের মায়ের নারাজির আবেদন গ্রহণ করে পিআইবিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
অন্য আসামিরা হলেন- সুমন ব্যাপারী, টিটু, কিবরিয়া, মুরাদ হোসেন, আবু তাহের, ইব্রাহিম সুমন, রকি তালুকদার, শফিকুল ইসলাম, তুহিন মিয়া, হারুন অর রশীদ, তারিকুল ইসলাম, নুর মোহাম্মদ, হাসান ও ইকবাল হোসেন। সুমন ও শফিকুল ছাড়া বাকি ১৩ আসামি কারাগারে। তাদের মধ্যে ৯ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০২১ সালের ১৬ মে শাহিন উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের পর ওই রাতেই নিহতের মা আকলিমা বেগম বাদী হয়ে পল্লবী থানায় সাবেক এমপি আউয়ালসহ ২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় এম এ আউয়ালকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া অন্য আসামিরা হলেন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুমন, মো. আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরন আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালু ওরফে কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু।
মামলার এজাহারে আকলিমা বেগম বলেন, ২০২১ সালের ১৬ মে বিকেল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক শাহিন উদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেন। শাহিন উদ্দিন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-বøকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে সুমন ও টিটুসহ ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে তাকে টেনেহিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যায়। এ সময় শাহিন উদ্দিনের ৬ বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে আবার কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।