জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন গড়ে পঞ্চাশ হাজার যাত্রী নিয়ে ৩৭ জোড়া ট্রেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করে। এসব ট্রেন এবং যাত্রী উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে ঢাকাগামী ১৬টিসহ মোট ২৪টি ট্রেনে বসাচ্ছে সিসি ক্যামেরা। রেলের এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন যাত্রীরা।
রেল কর্মকর্তারা বলছেন, এটা সার্বিক নিরাপত্তাসহ ট্রেনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এর ফলে কমবে নাশকতা। সেইসঙ্গে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে দ্রুত চিহ্নিত করার পাশাপাশি আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত, ট্রেনের ভেতর জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারাসহ নানা নাশকতার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে রেলওয়ে প্রশাসন। এরইমধ্যে ছয়টি আন্তঃনগরসহ ১৮টি ট্রেনকে আনা হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায়। কোচগুলোর ভেতরে সিসি ক্যামেরা থাকলেও এবার ট্রেনের বাইরে স্থাপন করা হবে ক্যামেরা। এরফলে ট্রেনসহ নিশ্চিত করা হবে যাত্রীর নিরাপত্তা।
ট্রেনযাত্রী হাসান আলী বলেন, এটাতে আমি একজন যাত্রী হিসেবে খুবই নিরাপত্তাবোধ করছি। এটা আসলে আমাদের জন্য একটা সৌভাগ্যের বিষয় যে ট্রেনে এমন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।রাজশাহী থেকে ঢাকগামী ট্রেনের যাত্রী শিল্পী রানী বলেন, সিসি ক্যামেরার ফলে নাশকতার আর কোনো ভয় থাকবে না। কে করবে সেটা ধরা পড়ে যাবে। আমাদের জন্য উপকারী হবে এই সিসি ক্যামেরা।
ঢাকা থেকে রাজশাহী আসা ট্রেনের যাত্রী সিরাজুল ইসলাম বলেন, সিসি ক্যামেরার ডেফিনেটলি পজিটিভ দিক আছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ফুটেজ দেখে আইডেন্টিফাই করা যাবে। সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে এটি সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্মকর্তারা বলছেন, এর ফলে শুধু যাত্রী নিরাপত্তা নয়, ট্রেনের বাইরে এবং ভেতরে থাকা রেল সদস্যরাও আসবেন নজরদারির আওতায়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, আমাদের সম্মানিত যাত্রী যারা আছেন তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্ল্যান দেখে এবং সেই রিপোর্টটা দেওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে আমার ধারণা ঢাকাগামী ১৬টি ট্রেন ও রূপসা-সীমান্তসহ সর্বমোট ১৮টি ট্রেনে প্রাথমিকভাবে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
রেল পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নয়। ট্রেন এবং যাত্রী উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
পাকশী রেলওয়ে পুলিশের সুপার শাহাব উদ্দিন বলেন, আমি আশা করছি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে ইন্টার্নাল এবং এক্সটার্নাল কোনো ধরনের কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের জনবলের স্বল্পতা থাকলেও আমরা যাত্রী এবং ট্রেনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি।