খেলাধুলা ডেক্স:
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তানের ইতিহাস বদলাতে চেয়েছিলেন নতুন টেস্ট অধিনায়ক শান মাসুদ। কিন্তু পূর্বসূরি ওয়াসিম আকরাম, মোহাম্মদ ইউসুফ, মিসবাহ–উল–হক, আজহার আলীদের মতোই ভাগ্য বরণ করতে হলো মাসুদকে। এবারও অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধবলধোলাই হলো পাকিস্তান। সিডনিতে ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্টে ৮ উইকেটে হেরে অস্ট্রেলিয়ায় এ নিয়ে টানা ১৭ টেস্টে পরাজিত হলো তারা।
কাল টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। পড়ন্ত বিকেলে জশ হ্যাজলউডের তোপে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। আজ চতুর্থ দিনে দ্রুতই বাকি ৩ উইকেট তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা। তাতে স্বাগতিকদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩০ রান।টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ১৩০ রান করতেও অনেক সময় দলগুলোকে হিমশিম খেতে হয়। তবে আজ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের ওপর কোনো চাপই সৃষ্টি করতে পারেননি পাকিস্তানের বোলাররা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে উসমান খাজাকে হারালেও অনেকটা ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করেছেন ওয়ার্নার–লাবুশেনরা।পাকিস্তান জিততে না পারলেও সিরিজজুড়ে মাসুদের নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু আজ তাঁর অধিনায়কত্ব ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এই সিরিজের সেরা আবিষ্কার ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি আমের জামালকে মাসুদ বোলিংয়ে এনেছেন ২০তম ওভারে। ততক্ষণে ম্যাচের দফারফা প্রায় হয়ে গেছে, অস্ট্রেলিয়ার লাগত মাত্র ৩৩ রান।সিডনিতে চতুর্থ দিন থেকে উইকেট সাধারণত ভাঙতে শুরু করে। উইকেট ভাঙতে শুরু করলে স্পিনাররা সহায়তা পেয়ে থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী দুই ব্যাটসম্যান খাজা ও ওয়ার্নার বাঁহাতি হওয়ায় শুরুতেই ডানহাতি অফ স্পিনার সাজিদ খানকে বোলিংয়ে এনেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক মাসুদ। তাঁর সে কৌশল কাজেও দেয়।
প্রথম ওভারেই সাজিদের বলে এলবিডব্লু হন খাজা। সাজিদ শুরুতে ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ায় তাঁকে দিয়েই আরও কয়েক ওভার করানোর পরিকল্পনা করেছিলেন মাসুদ, এমনটাই মনে করেন হাফিজ, ‘এই পিচ থেকে বাড়তি কিছু পাওয়ার সুযোগ ছিল। এ কারণে অফ স্পিনারকে দিয়ে আরও বেশি বল করানো হয়েছে। মাঠে থাকা অধিনায়কই এটা ভালো বুঝতে পারে। তাই ওর সিদ্ধান্তকে আমাদের সমর্থন জানাতেই হতো।’পাকিস্তানের প্রধান ফাস্ট বোলার শাহিন আফ্রিদিকে সিডনি টেস্টে খেলোনো হয়নি। অনেকে ভেবেছিলেন, শতভাগ ফিট থাকার পরও আফ্রিদিকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে। ওয়াসিম আকরাম-ওয়াকার ইউনিসের মতো কিংবদন্তিরা তো তাঁর ওপর বেজায় চটেছেন। তবে তরুণ ফাস্ট বোলারকে শেষ টেস্টে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্তকে সঠিক মনে করছেন হাফিজ। তিনি এ–ও জানিয়েছেন, আফ্রিদির শরীরে ব্যথা ছিল। অস্ট্রেলিয়া এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে যাওয়ায় শেষ টেস্টে তাঁকে খেলানোর ঝুঁকি নেওয়া হয়নি, ‘প্রথম দুই টেস্টে সে বেশ ভালো বল করেছে এবং যেকোনো বোলারের চেয়ে বেশি ওভার করেছে। কিন্তু তৃতীয় টেস্টে খেলার ব্যাপারে আমি যখন ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, ও বলল, ওর শরীর ব্যথা করছে। এ অবস্থায় ওর দেখাশোনা করাটা সবকিছুর চেয়ে জরুরি হয়ে পড়েছিল।’