প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরকালে তিনটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ইতালির রোম নগরীতে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের সময় বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ পররাষ্ট্র দফতরে প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ইতালির হাতে তিনটি খসড়া চুক্তি রয়েছে। তারা যদি এই সময়ের মধ্যে এগুলো চূড়ান্ত করতে পারে তাহলে এ সফরকালে চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হবে।
মোমেন বলেন,প্রস্তাবিত চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক বিনিময়, রাজনৈতিক আলোচনা এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের আমন্ত্রণে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ইতালিতে চার দিনের দ্বিপক্ষীয় সরকারী সফরে রোমের উদ্দেশে রওনা হবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সফরকালে, ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর একটি যৌথ ইশতেহার জারি করা হবে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘যদি সফরের সময় প্রস্তাবিত চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করা সম্ভব না হয়, তবে সেগুলো যৌথ বিবৃতিতে প্রতিফলিত হবে এবং পরে চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইতালি দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করছে। তবে উভয় দেশের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তির কোন সম্ভাবনা নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৫ ফেব্রুয়াারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিভিন্ন খাতে আরও বেশি ইতালিয়ান বিনিয়োগের আহ্বান জানবেন।
তিনি বলেন, এছাড়াও দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় ইস্যুর ব্যাপক পরিম-ল এবং পাশাপাশি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
একই দিন কয়েকটি ইতালীয় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর বাসস্থানের সভাকক্ষে সাক্ষাৎ করবেন।
পররষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পর পর তৃতীয় বারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি হচ্ছে ইতালিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। মোমেন আশা প্রকাশ করেন যে, এই সফর বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং চলমান উন্নয়নের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সফরটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করছে। কারণ এ সফরে বাংলাদেশে ইতালীয় উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগের সন্ধান, ইতালিতে আরও বিভিন্ন পণ্য রফতানি এবং দক্ষ জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্র অনুসন্ধান করার প্রয়াস চালানো হবে।
মোমেন বলেন, ইতালি এযাবৎ আমাদের অনেক নাগরিককে সেখানে বসবাসের সুযোগ দিয়েছে এবং আরও অনেকে সেখানে বসবাসের সুযোগ লাভের জন্য অপেক্ষা করছে। তাই এ সফরকালে জনশক্তি রফতানির বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইতালি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার এবং সেখানে দুই লক্ষেরও বেশি বাংলাদেশী বসবাস করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে ইতালির রাজধানী রোমের উদ্দেশ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করবে।
ইতালির স্থানীয় সময় বিকেল সোয়া ৪ টায় ফ্লাইটটি রোমের ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
বিমানবন্দরে সংবর্ধনা শেষে, একটি আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রাসহকারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পার্কো দেই প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পা-তে নিয়ে যাওয়া হবে। তিনি ইতালির রাজধানীতে সফরকালে এখানে অবস্থান করবেন।
শেখ হাসিনা একই দিন সন্ধ্যায় পার্কো দেই প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পা-তে একটি কমিউনিটি অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেলে ইতালিয়ান প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার আগে সকালে ভিয়া ডেল আন্তারতিদ এলাকায় রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সারি ভবনের উদ্বোধন করবেন।
শেখ হাসিনা ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে পোপ ফ্রান্সিসের সাথে সাক্ষাত করবেন।
তারপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুর ১২ টা ৫০মিনিটে ট্রেনে করে মিলান শহরের উদ্দেশে যাত্রা করবেন এবং স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় সেখানে পৌঁছে যাবেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিলান সফরের সময় তিনি এক্সেলসিয়র হোটেল গালিয়ায় অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে আমিরাতের ফ্লাইটে মিলান মালপেন্সা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
তিনি দুবাই হয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন।