বাবার লাশ সামনে রেখে অঝোরে কাঁদলেন এমাজউদ্দীনপুত্র জিয়াউল
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজার আগে লাশ সামনে রেখে বাবার স্মৃতি স্মরণ করে অঝোরে কান্না করেছেন তার বড় ছেলে জিয়াউল হাসান ইবনে আহমদ।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘বাবার সঙ্গে এই মসজিদে (রাজধানীর কাঁটাবনের মসজিদে মুনাওঅর) বহু বছর ধরে নামাজ আদায় করছি। মসজিদে বাবা আর আসবেন না, কিন্তু আমি আসব।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কাঁটাবনের এই মসজিদে এমাজউদ্দীন আহমদের জানাজা হয়। এ সময় বাবার রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া চেয়ে সংক্ষিপ্ত কথা বলেন জিয়াউল।
তিনি বলেন, করোনার কারণে কয়েক মাস ধরে বাবা এই মসজিদে আসতে পারতেন না। এ জন্য তিনি অনেক অনুশোচনা করতেন। আফসোস করে তিনি আমার কাছে জানতে চাইতেন, মসজিদে না যাওয়ার কারণে আল্লাহ তাকে (বাবা) ক্ষমা করবেন কিনা? তখন আমি বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলতাম, বাবা করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আবার মসজিদে যাব। অথচ, আর তার মসজিদে যাওয়া হবে না।
এমাজউদ্দীনের বড় ছেলে বলেন, বাবা এই মসজিদে জুমা ও ওয়াক্তের নামাজগুলো নিয়মিত আদায় করতেন। বহুদিন ধরে তিনি এই মসজিদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিলেন। এই মসজিদে তার হাজারো স্মৃতি রয়েছে। এ কারণে উনার প্রথম জানাজা এই মসজিদেই আদায় করা হয়। অনেকেই বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাজা পড়ানোর জন্য। কিন্তু আমরা সেখানে তাকে নিইনি। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জিয়াউল হাসান সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, আল্লাহ বাবাকে ঈমানের সঙ্গে নিয়ে গেছেন। আপনারা সবাই তাকে ক্ষমা করবেন। আর তার কাছে কোনো দেনা-পাওনা থাকলে আমাকে জানাবেন। আমি সব পরিশোধ করে দেব।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএফইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ বি এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কবি আবদুল হাই সিকদারসহ দলীয় নেতাকর্মী, আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা।
এরপর বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এমাজউদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার স্ত্রী সেলিনা আহমদের কবরে দাফন করা হবে।
বৃহস্পতিবার রাত ২টায় স্ট্রোক করলে অধ্যাপক এমাজউদ্দীনকে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে নেয়া হয়। ভোর ৬টার দিকে সেখানে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
তার স্ত্রী সেলিমা আহমদ ২০১৬ সালেই মারা গেছেন। অধ্যাপক দিলরুবা শওকতা আরা ইয়াসমিন ও অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন তাদের দুই মেয়ে। দুই ছেলের মধ্যে জিয়া হাসান ইবনে আহমদ সরকারি কর্মকর্তা, তানভীর ইকবাল ইবনে আহমদ একজন চিকিৎসক।