নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নয় বরং বিদেশি শক্তির প্রভাবে ক্ষমতায় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত ‘কাগমারী সম্মেলন ও স্বাধীন বাংলাদেশ’- শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নাই। সরকার কি অবস্থান নিচ্ছেন, এ নিয়ে আমরা আশ্বস্ত হওয়ার মতো কিছু জানতে পারছি না। জনগণকে তারা পাত্তা দেয় না। ক্ষমতার উৎস হিসেবে জনগণ আর নেই। ক্ষমতার উৎস যারা; সেই বিদেশিদের সঙ্গে তারা আলোচনা করছেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নয় বরং বিদেশি শক্তির প্রভাবে ক্ষমতায় এসেছে। তাই চলমান মিয়ানমার সংকট সমাধান করতে সরকার চীন-ভারতের সহায়তা চাইছে।সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে নাগরিকদের বিভক্ত করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশ ইতোমধ্যে একটা গৃহযুদ্ধের অবস্থায় আছে। দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিয়েছেন চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য। অথচ আমরা এই সম্পর্কে কিছু জানি না, আমাদের দেশের পত্র-পত্রিকায় এই সম্পর্কে কিছু লেখা হয়নি। পরে সাংবাদিকরা যখন পররাষ্ট্র সচিবকে জিজ্ঞেস করেছেন তখন তিনি বলেছেন— এটাতো অনেক আগেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমার বন্দর আমি অন্য কাউকে দিয়ে দিয়েছি কিন্তু আমরা জানি না!
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে। বাংলাদেশের বাস্তবতা, ভূ-রাজনীতি, বিশ্বের পরিস্থিতিতে আমাদের নিজের মতো লড়াই করতে হবে। মানুষ ৭ তারিখের ভোট বর্জন করেছে।
মিয়ানমার ইস্যুতে সরকার ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, মিয়ানমারের এই অবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন পরাশক্তির অর্থনৈতিক অ্যাজেন্ডা মিলিত হওয়ায় এই অঞ্চলে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে কি না এ বিষয়ে একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত। মানুষকে জানতে হবে, এখানে কী ঘটছে?
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে সরাসরি জনগণের ভোটের অধিকারের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মৃত্যু ঘটেছে।
জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এর চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, মাওলানা ভাসানীকে সমাজ পরিবর্তনের কাজে আমরা যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারি নাই। তিনি জাতীয় মুক্তির যে চেতনা দেখিয়েছিলেন আমরা সেটাকে সঠিক দিকে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছি। জাতীয় সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের প্রশ্নটি নতুন করে আসছে।ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ।