
ক্রীড়া ডেস্ক:
আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের পদত্যাগ, টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এনামুল হক মনির পদত্যাগ, দেবব্রত পালের সঙ্গে অন্য ম্যাচ রেফারিদের বিবাদে জড়িয়ে পড়ার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। সেটি হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়কে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া।
লিগের একাদশ রাউন্ডে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে হৃদয় এলিট আম্পায়ার সৈকতের সঙ্গে বাজে আচরণ করে নিষেধাজ্ঞায় পড়েন। সংবাদ সম্মেলনে এসে দেশের আম্পায়ারদের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা ছাড়াও মুখ খোলার প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছিলেন। মাঠে এবং মাঠের বাইরে শৃঙ্খলা ভেঙে দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞায় পড়েন হৃদয়। মোহামেডানের আবেদনের পরও বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটি শাস্তি কমায়নি। অথচ সবার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আম্পায়ার্স বিভাগ শাস্তি স্থগিত করে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেয়।
এর প্রতিবাদে টেকনিক্যাল কমিটির প্রধানের পদ ছাড়েন মনি, দুদিন আগে বিসিবির চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন আম্পায়ার সৈকত। ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পালের সঙ্গে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করে লিখিত চিঠি দিয়েছেন বাকি ম্যাচ রেফারিরা। সেদিক থেকে বলা যায়, বিসিবিতে চলছে বিশৃঙ্খলা।
বিসিবি আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু জানান, হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ইস্যু নিয়ে টিভি টকশোতে নিজের মতামত দেন দেবব্রত পাল। যেটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারি রাহুলের বিরুদ্ধে গেছে। এতে করে ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ১৯ এপ্রিল ম্যাচ রেফারিদের নিয়ে মিটিং করেন ইফতেখার মিঠু। সেখানে আপত্তিকর কিছু ঘটনা ঘটে গেছে বলে জানান আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘দেবব্রত পাল ম্যাচ রেফারি হয়েও আরেক ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে মিডিয়াতে কথা বলে নিয়ম ভেঙেছে। সে (দেবব্রত) মিটিংয়ের শৃঙ্খলা মানছিল না। মিটিং শেষে তো বাগ্বিতণ্ডা হাতাহাতিতে গড়ায়।’
দেবব্রত পালকে ফোন করে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি ঢাকায় মিডিয়ার কাছে অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো বলেছেন, রাহুল কর্তৃক হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যেই ইস্যু নিয়ে এত ঘটনা, সেই হৃদয়ের শাস্তি দুই ম্যাচ বহাল রাখা হবে বলে জানান মিঠু। এই লিগে না পরের মৌসুমে এটি কার্যকর হবে, তা পরিষ্কার করেননি। তিনি বলেন, ‘মোহামেডানের একটা চাপ ছিল শাস্তি কমানোর। এ কারণে সাময়িকভাবে করা হয়েছে।’
মোহামেডানের চাপ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বিসিবি পরিচালক ও মোহামেডানের কর্মকর্তা মাহাবুবুল আনাম বলেন, ‘কেউ বলতে পারবে না আমি হৃদয়ের শাস্তি কমাতে বলেছি। মোহামেডান ভুল স্বীকার করে শাস্তি কমানোর অনুরোধ জানিয়েছে। সিদ্ধান্ত যা হয়েছে, তা আম্পায়ার্স বিভাগ নিয়েছে।’
ম্যাচ অফিসিয়ালদের একজন জানান, ইফতেখার মিঠু টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান মনিকে বলেছিলেন, বোর্ড পরিচালকরা মিটিং করে হৃদয়ের শাস্তি কমানো হয়েছে। এ কথা শোনার পর মনি টেকনিক্যাল কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন।