বিশ্ববিদ্যালয়ের পিকনিক বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: ৫:৫৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ

গাজীপুরের শ্রীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পিকনিক বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে তিন ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাফিসা আরেফিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি রাকিবুল ইসলাম তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটিতে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা আক্তারকে প্রধান করে চার সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ, ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) খন্দকার মাহমুদুল হাসান ও আরেকজনের নাম জানা যায়নি।অপরদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ও ইলেক্ট্রিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রাকিবুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার জনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রারসহ আরও দুই জন রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, যে বাসটি বিদ্যুতায়িত হয়েছে, সেটি নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পর তারা ওই বাসের ভেতরে গেলে মদের গন্ধ পান। মদের গন্ধের কারণে ওই বাসে তখন ওঠাই যাচ্ছিল না। সাংবাদিকেরা ভিডিও এবং ছবি উঠানোর সময় শিক্ষার্থীরা তাদের মোবাইল ও ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদেরকে আক্রমণ করতে গেলে এলাকাবাসী বাধা দিলে তারা সরে যান।শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামের স্থানীয় চায়না কারখানার সামনে আইইউটির পিকনিক বাসটি বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০০ শিক্ষার্থী স্থানীয় মাটির মায়া রিসোর্টে বনভোজনের উদ্দেশে যাওয়ার সময় বিআরটিসির দ্বিতল বাসটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১১ কেভি লাইনের স্পর্শে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১০ ছাত্র আহত হন। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) মারা যান। গুরুতর আহত মোজাম্মেল হোসেন (২৩) ও জুবায়ের রহমান সাকিবকে (২৩) ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ছয় জনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমরা বছরের পর বছর দ্বিতল বাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পিকনিক করে থাকি। দুর্ঘটনা এলে বলে কয়ে আসে না। দুর্ভ্যাগ্যবশত একটা ঘটনা ঘটে গেছে। এটা কাউকে দোষ দেওয়ার চেয়ে কীভাবে উত্তরণ করা যায়, কীভাবে আহতদেরকে চিকিৎসা করানো যায়, যেসব শিক্ষার্থী সেভ আছে তাদেরকে কীভাবে নিরাপদে পৌঁছানো যায়- সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তদন্ত করার পর বলা যাবে এটি দুর্ঘটনা কি না।

শিক্ষার্থীরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নেশাগ্রস্ত থাকার বা নেশা করার কোনও প্রশ্নই আসে না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের শিক্ষকরাও ছিলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দুর্ব্যবহার করায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর বলতে পারবো তাদের পক্ষ থেকে মামলা করবে কিনা।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালমা আক্তার, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।