ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে দুর্জয়ের জনসভা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি,গাজীপুরঃ
দ্বিতীয় দফায় আগামী ২১ মে অনুষ্ঠেয় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপিকা রুমানা আলীর ভাই ও সাবেক এমপি রহমত আলীর ছেলে জামিল হাসান দুর্জয়। নির্বাচনের মাঠে তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জলিল।
মঙ্গলবার দুপুরে দুর্জয়ের ঘোড়া প্রতীকের সমর্থনে উপজেলার নগরহাওলা গ্রামে এক জনসভার আয়োজন করা হয়। সভাস্থলের পাশেই গরু জবাই করে ভোটারদের জন্য ভূরিভোজের আয়োজন করেন দুর্জয়ের সমর্থক হারুন অর রশিদ বাবুল। কিন্তু এতে বাদ সাধেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাইখা সুলতানার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারা সেখানে গিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে হারুন অর রশিদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২১ পাতিল খাবার জব্দ করেন। সেই সঙ্গে দুর্জয়কে নির্দেশ দেন জনসভা না করার জন্য। কিন্তু আদালত চলে যাওয়ার পরও নির্দেশ উপেক্ষা করে দুর্জয় জনসভা চালিয়ে যান। খবর পেয়ে দ্বিতীয় দফায় সেখানে হাজির হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর তখনই ঘটে বিপত্তি।
স্থানীয় এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুমতি ছাড়া জনসভা না করতে দুর্জয়কে নির্দেশ দিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। জব্দ করা বিপুল পরিমাণ খাবার দিয়ে দেওয়া হয় আশপাশের এতিমখানাগুলোতে। ঘটনাটা এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু চেয়ারম্যান প্রার্থী দুর্জয় ও তাঁর সমর্থকরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে জনসভা চালিয়ে যেতে থাকেন। খবর পেয়ে আবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা এসে দুর্জয়ের এক কর্মীকে কারাদণ্ড দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় দুর্জয় এবং তাঁর সমর্থকরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘিরে ফেলে শাসাতে থাকেন এবং নিজেদের ওই কর্মীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। একটু পরে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শ্রীপুর ইউএনও শোভন রাংসা সেখানে এলে তাঁর সঙ্গেও দুর্জয় ও তাঁর কর্মীরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। পরে দুর্জয় ও তাঁর কর্মীদের হট্টগোলের মধ্যে পড়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা চলে যেতে বাধ্য হন।
এদিকে এই ঘটনার ভিডিও এরই মধ্যে মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, জামিল হাসান দুর্জয় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শোভন রাংসা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানাকে শাসাচ্ছেন। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় সেখানে গিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধির বেশ কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলে। প্রার্থীর এক কর্মীকে বিধি অনুযায়ী কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকরা এসে আমাদের সঙ্গে বেআইনি আচরণ করতে থাকেন। যে কর্মীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত দণ্ডিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তাঁকে তারা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও শোভন রাংসা বলেন, আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন প্রার্থী ও তাঁর কর্মীরা। বাকি সব কিছু তো ভিডিওতেই দেখেছেন।এ বিষয়ে জানতে রাতে জামিল হাসান দুর্জয়কে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এরই মধ্যে লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। সিইসি নিজেও অবগত রয়েছেন। কমিশনের নির্দেশ মতো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।