মধ্যপাড়া পাথরখনিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ

প্রকাশিত: ১:৪২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ 

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী মধ্যপাড়া পাথরখনিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে খনির ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলন বন্ধ হওয়ায় খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া টেস্ট কনসোর্টিয়ামের (জিটিসি) অধীন কর্মরত প্রায় ৭০০ খনি শ্রমিক ও কর্মচারীকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে খনির ভূগর্ভস্থ থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে গতকাল বুধবার খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া টেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) ঘোষণা দিয়েছিল। পাথর উত্তোলন বন্ধসহ খনি শ্রমিকদের অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটির বিষয়টি নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিশ্চিত করেছেন খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া টেস্ট কনসোর্টিয়ামের (জিটিসি) একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

খনি সূত্র জানায়, পাথরখনিতে প্রতি মাসে ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলনের গতি বেড়েছে। কিন্তু গতি বাড়েনি উত্তোলিত পাথর বিক্রিতে। প্রতি মাসে দেড় লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলিত হলেও বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০-৬০ হাজার মেট্রিক টন পাথর। এতে করে বিক্রির অপেক্ষায় ৯টি পাথর ইয়ার্ডে পড়ে থাকছে বিভিন্ন আকারের পাথর। বর্তমানে পাথর ইয়ার্ডে বিভিন্ন আকরের প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন পাথর মজুদ রয়েছে।

এদিকে মধ্যপাড়া পাথরখনিতে গত বছরের ডিসেম্বরে ১ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করা হয়। একইভাবে চলতি বছরের গত ২৬ জানুয়ারি তারিখে ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলন করা হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। যা খনির দৈনিক পাথর উত্তোলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টনকে ছাড়িয়ে পাথর উত্তোলনের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া টেস্ট কনসোর্টিয়ামের (জিটিসি)। যা খনির সৃষ্টি থেকে এই ২৬ জানুয়ারির আগ পর্যন্ত একদিনে এত বিপুল পরিমাণ পাথর উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। খনিতে পাথর উত্তোলনের পরিমাণ বাড়লেও উত্তোলিত পাথর বিক্রির কোনো গতি না থাকায় বিক্রির অপেক্ষায় ইয়ার্ডে মজুদ অবস্থায় পড়ে রয়েছে বিপুর পরিমাণ পাথর। এতে করে নতুন করে ভূগর্ভস্থ উত্তোলিত পাথর মজুদ রাখার জায়গা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কর্তৃপক্ষ। পাথর বিক্রি না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে খনির মজুদ পাথর বিক্রি না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া টেস্ট কনসোর্টিয়ামও (জিটিসি) তাদের সময়মতো বিল পাচ্ছে না। এতে করে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির অধীন কর্মরত ও বর্তমানে অনির্দিষ্ট সময়ের ছুটিতে থাকা কয়েকজন খনি শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে পাথর উত্তোলন করার পরও পাথর বিক্রি না হওয়ায় ইয়ার্ডে জমে রয়েছে পাথরের মজুদ। এ জন্য পাথর রাখার জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে যেমন, তেমনই সময়মতো বিল না পাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি তাদের অধীন কর্মরত ৭০০ দেশি খনি শ্রমিক-কর্মচারীসহ বিদেশি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, পাথর বিক্রি না হওয়ায় খনির ৯ ইয়ার্ড মজুদ পাথর দিয়ে ভর্তি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় নতুন করে উত্তোলিত পাথর মজুদ রাখা নিয়ে জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। যে পরিমাণ পাথর ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে, সেই পরিমাণ পাথর বিক্রি না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে পাথর বিক্রি না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেও তাদের বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না।