মস্তিষ্কের বিস্ময়কর শিখনরহস্য

প্রকাশিত: ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট:

 

কর্মক্ষেত্রে নতুন কাজ আয়ত্ত করা, গানের সুর মুখস্থ বা অপরিচিত রাস্তায় চলাচল করা– যা কিছুই হোক, আমাদের মস্তিষ্ক যখন নতুন তথ্য গ্রহণ করে, তখন তা এক বিস্ময়কর স্নায়বিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। প্রতিবার যখন আমরা নতুন কিছু অনুশীলন করি, তখন স্নায়ুকোষের মধ্যে লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র যোগাযোগ সূক্ষ্মভাবে সেগুলো সামঞ্জস্য করে এবং নিউরন জ্ঞান সঞ্চয়ের জন্য একাধিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে।

‘সিন্যাপস’ নামে পরিচিত কিছু সংযোগ সংকেতগুলো গ্রহণ করে; অন্যরা অতিরিক্ত শব্দ দূর করতে ভূমিকা রাখে। সম্মিলিতভাবে এসব পরিবর্তনকে ‘সিন্যাপটিক প্লাস্টিসিটি’ বলা হয়। কয়েক দশক ধরে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা কয়েক ডজন আণবিক পথ তালিকাভুক্ত করেছেন, যা সিন্যাপসকে প্রভাবিত করে।

রহস্যময় বিষয় হলো– মস্তিষ্ক অত্যন্ত রহস্যময়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় কোন সিন্যাপসকে ফের গ্রহণ করতে হবে, কোনটি ছেড়ে দিতে হবে। প্রতিটি সিন্যাপসের কেবল তার নিজস্ব স্থানীয় কার্যকলাপে প্রবেশাধিকার থাকে।

মস্তিষ্কের শিখন পদ্ধতি নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান দিয়েগোর একটি নতুন গবেষণা এখন অপ্রত্যাশিত সমাধান দিচ্ছে। এতে মস্তিষ্কের নিউরন কীভাবে শেখে, সে সম্পর্কিত দীর্ঘকালীন ধারণাগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

শিখতে অনীহার সমস্যাটি মোকাবিলার জন্য পোস্টডক্টরাল গবেষক উইলিয়াম রাইট, তাঁর সহকর্মী নাথান হেড্রিক ও তাকাকি কোমিয়ামা অত্যাধুনিক মস্তিষ্ক-ইমেজিং প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছেন। টু-ফোটন মাইক্রোস্কোপি একটি কৌশল, যা একক-সিন্যাপস রেজল্যুশনের মাধ্যমে জীবন্ত টিস্যুর গভীরে কার্যকলাপ রেকর্ড করতে পারে। এটি ব্যবহার করে তারা ইঁদুরের মস্তিষ্ক পর্যবেক্ষণ করেন, যখন ইঁদুর নতুন কোনো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে।

একাধিক প্রশিক্ষণ সেশনের মাধ্যমে মাইক্রোস্কোপ প্রতিটি নিউরনের ডেনড্রাইটে আগত ‘ইনপুট’ মেরুদণ্ড এবং একই কোষের বহির্গামী ‘আউটপুট’ ফায়ারিং প্যাটার্ন উভয়ই ট্র্যাক করেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের নিউরন বহুমাত্রিক সংকেত মূল্যায়নের মাধ্যমে শেখে। এ প্রক্রিয়ায় যে জৈব-রাসায়নিক পরিবর্তন আসে, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন তারা। গবেষকরা জানতে পেরেছেন, মাদকাসক্তি ও ট্রমা-উত্তর স্ট্রেস ডিজঅর্ডারসহ অনেক স্নায়বিক ও মনস্তাত্ত্বিক ডিজঅর্ডারের পেছনে ‘সিন্যাপটিক প্লাস্টিসিটি’র গোলযোগ দায়ী।