মহাখালী বাস টার্মিনালে নির্ধারিত ভাড়ায় বাড়ি যেতে পেরে খুশি যাত্রীরা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
মোঃ সাইফুল ইসলামঃ
ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়ায় বাড়ি যাওয়া যেনে যাত্রীদের ‘নিয়তি’ হয়েছে দাঁড়িয়েছে। তাতে যাত্রীদের অভিযোগ থাকলেও নেই কোনো সুরাহা। তবে এবার ঈদযাত্রায় এখনো নির্ধারিত ভাড়ায় বাড়ি যেতে পারছেন বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। আর এতে খুশি তারা।শনিবার (৫ এপ্রিল) মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মহাখালীতে স্বল্পদূরত্বের গন্তব্যের বাসগুলোতে এখনও ঈদের যাত্রী সেভাবে আসা শুরু করেনি। তারপরও যারা আসছেন তারা নির্ধারিত ভাড়ায় বাড়ি ফিরছেন। তবে টিকিটের অতিরিক্ত ভাড়া আটকাতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। টার্মিনালে পুলিশ, র্যাব, বিআরটিএ’র টহল জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনে নির্ধারিত ভাড়া কাটার নোটিশ টাঙানো হয়েছে। কোনো কাউন্টার অতিরিক্ত ভাড়া নিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে নোটিশে বলা হয়েছে।মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোণা, শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, গাইবান্ধা, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ ও রংপুর জেলার গাড়ি ছেড়ে যায়।
পরিবারসহ পাঁচ সদস্য নিয়ে সিরাজগঞ্জ যাবেন মিরাজ মিয়া। তিনি জানান, ঈদের আগের মতো আজও ৩৮৫ টাকায় টিকিট কেটেছি। কাউন্টার থেকে বাড়তি কোনো ভাড়া চাওয়া হয়নি। সবকিছু ঠিক আছে। এবারই প্রথম ঈদের সময় বাড়তি ভাড়া ছাড়া টিকিট কাটতে পেরেছি, এটাই খুশির খবর।
এনা কাউন্টারের ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম বলেন, মহাখালী থেকে সিলেট ও ময়মনসিংহে আমাদের গাড়িতে যাত্রীরা যায়। তাই এখনও ঈদযাত্রায় ভিড় সেভাবে হয়নি। সোমবার থেকে ভিড় বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। অতিরিক্ত ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মালিক কড়া নিষেধ করেছেন। তাছাড়া প্রশাসন থেকে কড়াকড়ির কারণে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই।
বাড়তি ভাড়া ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী- এবার ঈদে বাড়তি ভাড়া ঠেকাতে গত সপ্তাহ থেকে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ, র্যাব, বিআরটিএ’র ভিজিলেন্স টিম ছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। বাহিনীগুলো টার্মিনালের ভেতরে বুথ, কন্ট্রোল রুমে বসে দায়িত্ব পালন করছে।মহাখালীতে র্যাবের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আ. মান্নান বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া ও টার্মিনালের নিরাপত্তায় ২৪ ঘণ্টা এখানে র্যাব টহল দিচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কোনো অভিযোগ কেউ করেনি। প্রতিটি কাউন্টারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভিজিলেন্স টিমের দায়িত্বে থাকা নজরুল ইসলাম বলেন, একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি টিম সারাক্ষণ এখানে কাজ করছে। কোনো বাস অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে কিনা তা কাউন্টারের গিয়ে গিয়ে চেক করছি। এছাড়া কোনো যাত্রী অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৫-৭টি অভিযোগ পেয়েছি। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি।
পুলিশ কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, পুলিশের ৩০ জন সদস্য সার্বক্ষণিক টহলের দায়িত্ব পালন করছেন। বাস বের ও প্রবেশ করার জন্য রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরা সদস্যরা সমন্বিতভাবে কাজ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কাজ করছে। এবার যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়া ও নির্বিঘ্নে ঈদ করতে বাড়িতে যেতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।