মার্চে এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির হার বেড়েছে

প্রকাশিত: ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

সেলিনা আক্তারঃ

ব্যাংক খাতে ডলারের সরবরাহ বাড়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে এলসি (ঋণপত্র) খোলা এবং নিষ্পত্তি উভয়ই বেড়েছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে ব্যাংকগুলো ৬.১৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি ঋণপত্র খুলেছে, যা ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। গত ফেব্রুয়ারিতে পণ্য আমদানিতে এলসি খোলা হয়েছিল ৫.২৮ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চে আমদানিতে এলসি খোলা হয়েছিল ৬ বিলিয়ন ডলারের কম।

ব্যাংকাররা বলছেন, ডলারের সংকট এখনো পুরোপুরি কাটেনি। তবে গত কয়েক মাস ধরে প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি হচ্ছে। রেমিট্যান্স আয়ও ভালো। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর হাতে ডলারের তারল্য ভালো। ফলে আগে যেসব পণ্যের আমদানি এলসি তারা খুলতেন না, এখন সেগুলোও খোলার চেষ্টা করছেন।

ব্যাংকে ডলার থাকায় সাইট এলসি খোলা আগের তুলনায় বেড়েছে। গত দুই-তিন মাস আগেও এলসির ২৫ শতাংশ ছিল সাইট, বাকিটা ছিল ডেফার্ড। মার্চ মাসে যেসব এলসি খোলা হয়েছে, তার ৫০ শতাংশের বেশি সাইট এলসি।সাইট এলসির ক্ষেত্রে এক সপ্তাহের মধ্যে পেমেন্ট করতে হয়। ব্যাংকগুলোতে যখন ডলারের অবস্থা ভালো থাকে, তখন এ ধরনের এলসি খোলা হয়। অন্যদিকে ডেফার্ড বা বিলম্বিত এলসি পেমেন্টের জন্য ৯০ থেকে ১৮০ দিনের সময় থাকে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো আমদানি লেনদেনের জন্য ডেফার্ড এলসি খুলতেই পছন্দ করে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে হওয়া আমদানি লেনদেনের জন্য যেসব এলসি খোলা হয়েছিল, সেগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশের অর্থ প্রদান করা হয়েছে মার্চ মাসে।

ব্যাংকাররা জানান, ব্যবসায়ীরা এখন সাইট এলসি বেশি খুলতে চাচ্ছেন। সামনের দিনগুলোতে ডলারের দাম কেমন থাকবে, এটি নিশ্চিত হওয়া কঠিন। ডলারের দাম বেড়ে গেলে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতির শিকার হতে হয়। এসব কারণে ব্যবসায়ীরা সাইট এলসি খোলায় বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ভোগ্যপণ্যের আমদানির এলসি খোলা কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ। এছাড়া মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি এলসি খোলা কমেছে ১৯ শতাংশ, মধ্যবর্তী পণ্য কমেছে ১৭ শতাংশ এবং শিল্পের কাঁচামাল কমেছে ৪ শতাংশ।অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সূত্রে জানা গেছে, ডলার পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক স্থিতিশীল হয়েছে। ডলারের দামও কমেছে। ব্যাংকগুলোর হাতে এখন ভালো পরিমাণে ডলার রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত মার্চ মাসে আমদানি এলসি নিষ্পত্তি করা হয়েছে ৫.৪৫ বিলিয়ন ডলার। ফেব্রুয়ারির তুলনায় এটি ১৪.৫ শতাংশ বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসে নিষ্পত্তি হয়েছিল ৪.৭৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই- ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ।তবে ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে পারছে জানালেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা পর্যাপ্ত এলসি খুলতে পারছেন না। এছাড়া এলসি নিষ্পত্তিতে ডলারের দাম বেশি দিতে হচ্ছে। এদিকে ব্যাংকগুলো জানিয়েছে, এলসি নিষ্পত্তিতে ডলারের দাম রাখা হচ্ছে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা।