মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে খালাসের আদেশ চেম্বারে স্থগিত
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শরীফুলকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত। তবে তাকে আপাতত কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৩ কেজি ৭০০ গ্রাম হেরোইনসহ শরীফুলকে ২০১২ সালে চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আটক করে বিজিবি। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় ২০১৭ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পাঠানো হয় কনডেম সেলে। এরপর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলার নথি ডেথরেফারেন্স আকারে পাঠানো হয় হাইকোর্টে। পাশাপাশি জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন শরীফুল।
এদিকে শুনানি শেষে বিচারপতি মো. বদরোজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১২ সেপ্টেম্বর ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে রায় দেন। সেই সঙ্গে সাজা পরিবর্তন করে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যেহেতু এরই মধ্যে আসামি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন তাই তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, ২৫ গ্রামের বেশি হেরোইন হলে আইনে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান আছে। এর বিকল্প সাজার বিধান নেই। এখানে ৩ কেজি ৭০০ গ্রাম হেরোইন। তাই ১০ বছরের সাজা আইন সঙ্গত নয়। রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করলে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের আদেশ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। ৩ কেজি ৮০০ গ্রাম হেরোইনের মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন বিচারপতি বদরুজ্জামান ও জাহিদ সরোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। কিন্তু শরিফুল নামের ওই আসামি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন।
আদেশের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিচারপতিদের এমন আদেশ দেওয়ার ক্ষমতাই নেই। আইনে আছে হয় মৃত্যুদণ্ড না হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে হবে। কিন্তু কীভাবে তারা ১০ বছরের সাজা দিলেন? হাইকোর্টের এ রায় বৈধ হয়নি বলে আমরা মনে করি। পরে আদালত আমাদের সাবমিশন শুনে সেই আদেশ স্থগিত করেছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০ এর ১৯ (১) ধারা বলছে ২৫ গ্রামের বেশি হেরোইনসহ কেউ গ্রেফতারের পর বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার সাজা হবে ফাঁসি অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত শরিফুলকে কনডেম সেল থেকে নরমাল সেলে আনা হয়।