নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেছেন, ‘অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ উদ্বোধন করবেন, তার পরদিন থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।’
আজ বুধবার (৯ জুলাই) উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের নিচের সড়কের মিডিয়ানে বৃক্ষরোপণ উদ্বোধন শেষে আগারগাঁও ডিএমটিসিএল সভা কক্ষে এ কথা বলেন তিনি।
এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা আশা করছি ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আমাদের সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের যেকোনও দিন সময় দেবেন, সেদিনই মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল উদ্বোধন করা হবে।’
মতিঝিল পর্যন্ত ধাপে ধাপে মেট্রোরেল চলাচল করে জানিয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘প্রথমে আমরা সীমিত আকারে ও সীমিত সময়ের জন্য ট্রেন চালাবো। যখন দেখা যাবে পুরো সিস্টেম ভালোভাবে চলছে, তখন আমরা আগের অংশের সঙ্গে মার্জ করে দেবো। পর্যায়ক্রমে ট্রেনের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।’
শুরুতে সব ট্রেন মতিঝিল পর্যন্ত যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু ট্রেন মতিঝিল যাবে, কিছু আগারগাঁও পর্যন্ত যাবে। ট্রেনের নম্বর থাকবে। সে নম্বর অনুযায়ী কোন ট্রেন আগারগাঁও পর্যন্ত, কোন ট্রেন মতিঝিল পর্যন্ত যাবে, সেটা বলা থাকবে। এটা সাময়িক বিষয়। আর পুরোদমে ট্রেন চলবে আগামী জানুয়ারি থেকে।’
পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেলের সময়সূচিও কমিয়ে আনা হবে জানিয়ে এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা দেখেছি বিকালের দিকে অনেক যাত্রী হয়। সেখানে ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে আনা দরকার। সে ক্ষেত্রে ফ্রিকোয়েন্সিও কমিয়ে দেবো।’
এর আগে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ রুট অ্যালাইনমেন্টে সড়কের মিডিয়ানে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আমিন উল্লাহ।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে বলা হয়, মেট্রোরেলের কাজ করার সময় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৭৭টি গাছ কাটা পড়েছে। এ জন্য ওই অংশে মেট্রোরেলের ডিপো, স্টেশন প্লাজা, সড়কের মিডিয়ানে ৫ হাজার ৭৪৭টি গাছ লাগানো হবে। এ ছাড়া ২৪ হাজার ৭১৮টি শোভাবর্ধনকারী গাছ থাকবে।
বৃক্ষরোপণের এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। তারা আগামী তিন বছর গাছ রোপণ ও পরিচর্যা করবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন। পরদিন থেকেই যাত্রী চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় দেশের প্রথম বিদ্যুচ্চালিত এই আধুনিক গণপরিবহন।
২০১৬ সালে ২৬ জুন এমআরটি-৬ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর মেট্রোরেল চালু হয়। ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এমআরটি-৬-এর নির্মাণকাজ চলছে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার সহযোগিতায়।