যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক সাবেক ছাত্রদল নেতার হাসপাতালে মৃত্যু

প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুর রহমান (৩৩) নামে এক সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

নিহত আব্দুর রহমান জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হীরাপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মাওলানা সাইদুল হকের ছেলে। তিনি সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ আব্দুর রহমান ও হাবিবুর রহমান (২৫) নামে দুই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাৎক্ষণিক তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রহমান মারা যান। তাদের দুইজনেরই শরীরে ফুলা জখম ছিল। কিন্তু তাদের শরীরে গুরুতর কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। হাসপাতালে ভর্তি থাকা হাবিবুর রহমানের অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত নয়।

নিহত আবদুর রহমানের চাচা মো. হানিফ বলেন, সোমবার ভোররাতের দিকে হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। একপর্যায়ে আমার ভাতিজা আব্দুর রহমান ও একই বাড়ির আরেক ভাতিজা হাবিবুর রহমানকে তাদের ঘর থেকে আটক করে যৌথবাহিনী। আটকের পর তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে মারধর করা হয়। এরপর সকালে স্থানীয় পশ্চিম পাড়া বাবুলের দোকানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তাদের কাছ থেকে কার্তুজ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে জানানো হয়। এরপর সকাল ৮টা-৯টার দিকে তাদের সোনাইমুড়ী থানা সোপর্দ করা হয়।

হানিফ জানান, ভাতিজাকে থানায় সোপর্দ করার পর তারা থানায় গিয়ে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান। তখন তারা পুলিশকে অনুরোধ করেন তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। তখন পুলিশ জানায়, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানোর পর আদালতে আবেদন করলে সেখান থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি আরও জানান, সারা দিন থানা থেকে তার ভাই ও ভাতিজাকে আদালতে না পাঠিয়ে পাঠানো হয় বিকাল পাঁচটায়। আদালতে তাদের উপস্থাপনের পর গ্রহণ না করে আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বললে পুলিশ তাদের বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণ পর তার ভাই আবদুর রহমান মারা যান। আর ভাতিজা হাবিবুর রহমান একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এলাকায় তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ কেউ করতে পারবে না যে, সে কোন অন্যায়, অপরাধ করেছে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, সকালে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। তখন তাদের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। যখন তাদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয় তখন তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। তখন তাদের স্থানীয় বজরা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মারামারির ঘটনায় দায়ের হওয়া পূর্বের তিনটি মামলা রয়েছে। আর হাবিবের বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই। তাদের কাছ থেকে রাইফেলের লম্বা দুইটি গুলি ও তিনটি রাম দা উদ্ধার করা হয়েছে।’

ওসি মোরশেদ আলম জানান, নিহত যুবকের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মঙ্গলবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ এরপর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।