নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর মহাখালীতে খাজা টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে আরও দুইজন মারা গেছেন। এ নিয়ে এ ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হলো।
নিহতরা হলেন-রফিকুল ইসলাম (৬৩), আকলিমা রহমান (৩৩) ও হাসনা রানু (২৭)।
রফিকুল ইসলাম ভবনটির ১৩ তলার একটি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ছিলেন। আগুন লাগার পর তিনি সেখানে আটকা পড়েন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভবনের ১১ তলা থেকে আকলিমা রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, আকলিমা ওই ভবনের ৯ তলায় একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছিলেন।
এর আগে সন্ধ্যার দিকে ভবনের ৯ তলার একটি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানের কর্মী হাসনা রানু ভবন থেকে নামার সময় পড়ে মারা যান।
রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মলেনে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, এখনও ভেতরে আগুন আছে। এখানে ব্যাটারি, স্টোর, ক্যাবল ও সুইচ আছে। এছাড়া ১২ থেকে ১৪ তলা খুব বেশি ডেকরেশন করা। এটা আগুন ছড়িয়ে পড়ার বড় কারণ। যার জন্য আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও নির্বাপণে আরও সময় লাগবে।
মাইন উদ্দিন বলেন, বিকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিটের ১৫০ সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় তিনটি টিটিএল এই আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়েছে। ৫টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ শুরুর সময় বাইরে আগুন তেমন একটা ছিল না। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু একজনকে উদ্ধার করার জন্য বেশ কিছু সময় নেওয়া হয়। কারণ ১৩ তলায় একটি অফিস আছে। সেখানে থাকা অবস্থান করায় উদ্ধার কাজে বিঘ্ন হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেছেন, ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৭জন পুরুষ ও তিনজন নারী। এদর মধ্যে দুজন লাফিয়ে পড়েছে। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর পরে শেষ মূহুর্তে আরও একজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকেও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আরও অনেকেই ছিলেন ভবনে তাদের বিভিন্ন উপায়ে উদ্ধার করা হয়েছে।
আগুন লাগার বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ বলছে আগুন ৪তলায় লাগে। সেখান থেকে ডার্ক লাইনের মাধ্যমে উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। আবার অনেকেই বলছে ১১তলা থেকে আগুণের সূত্রপাত। তবে এখনই আমরা বলতে পারছি না আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে। আমরা তদন্ত করবো, তখন বেরিয়ে আসবে আগুন লাগার কারণ, কোথা থেকে সূত্রপাত। বৈদ্যুতিৎ শর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। যতদ্রুত সম্ভব আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসে সার্চ করে পুলিশকে বুঝিয়ে দিবো। তারা ভবন কতৃপক্ষের কাছে ভবন হস্তান্তর করবেন। এখন পর্যন্ত ভবনের মধ্যে কেউ নেই বলে জানি। তবে একজনকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে খোঁজ করতে মূলত ভবনে সার্চ করা হবে।
অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কি না জানতে চাইলে বলেন, সামগ্রিকভাবে সেফটি প্লান ছিল না। তবে বিভিন্ন ফ্লোরে ফায়ার ইকুপমেন্ট পেয়েছি এবং সেগুলো কাজও করেছে। কিন্তু দাহ্য পদার্থ বেশী ছিল, এজন্য আগুন ছড়িয়ে গেছে।