রোহিঙ্গাদের কাছেই সাহায্য চায় জান্তা সরকার

প্রকাশিত: ১২:০১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক রিপোর্টঃ 

সাত বছর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হাজারো রোহিঙ্গা মুসলিমকে নির্বিচার হত্যা করে। মিয়ানমার সেনাদের এই হত্যাযজ্ঞকে জাতিগত নিধনের উদাহরণ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ। আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধে বিপর্যস্ত সামরিক জান্তা এখন সেই রোহিঙ্গাদের কাছে সাহায্য চাইছে।সংঘাতপূর্ণ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিবিসি। তারা জানিয়েছে, যুদ্ধরত জান্তার পক্ষে লড়াইয়ের জন্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় অন্তত ১০০ রোহিঙ্গাকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাদলে নিযুক্ত করা হয়েছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের

আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার আগে তাদের অস্ত্র চালানোর সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। আর সেনাবাহিনীতে যুক্ত করতে রোহিঙ্গা পুরুষদের খাবার, নিরাপত্তা এবং সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।বিবিসি যাদের সঙ্গে কথা বলেছে, তাদের একজন মোহাম্মদ (ছদ্মনাম)। রাখাইনের রাজধানী সসিত্তের কাছে বা দু ফা অস্থায়ী শিবিরে তিন সন্তান নিয়ে তাঁর বসবাস। সেনাবাহিনীর দমনপীড়নে ঘরবাড়ি হারানো রাখাইনের প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা গত এক দশক এসব অস্থায়ী শিবিরেই থাকছে। এই মোহাম্মদকেও যেতে হয়েছে যুদ্ধে। ৩১ বছর বয়সী মোহাম্মদ সেনাদলে নাম লেখানো প্রসঙ্গে বলেন, আমি ভীত ছিলাম। কিন্তু আমাকে যোগ দিতে হয়েছিল।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে কোনো এক মধ্যরাতে ক্যাম্পের নেতা তাঁর কাছে আসেন। ওই নেতাই জানান, তাঁকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এটি ছিল সামরিক আদেশ। তা না মানলে আমার পরিবারের ক্ষতি করা হবে বলে তারা হুমকি দিয়েছিল।বিবিসি বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে। তারা নিশ্চিত করেছেন, সেনা কর্মকর্তারা শিবিরগুলোর আশপাশে ঘোরাফেরা করছেন। তারা তরুণ রোহিঙ্গাদের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য হাজিরার নির্দেশ দিচ্ছেন।

এদিকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন রোববার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক সরকার ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাই মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। মিয়ানমার একাধিক ফ্রন্ট এখন বিদ্রোহের দখলে রয়েছে। জান্তাবিরোধী দলগুলো এরই মধ্যে থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরসহ বেশ কয়েকটি সেনাঘাঁটি ও শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।স্রেথা বলেন, জান্তা সরকার শক্তি হারাতে শুরু করেছে। তারা হেরে গেলেও তাদের শক্তি আছে, অস্ত্র আছে। তবে তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করার এখনই সময় যোগ করেন তিনি।