লটারিতে ভর্তি না করালে এমপিও বাতিলের হুঁশিয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
সাজ্জাদ হোসেন:
ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি না করালে এবং এ পদ্ধতিতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম করলে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি পর্যায়ে এমপিও বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারির (অনলাইনে দৈবচয়ন পদ্ধতি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল। অনুষ্ঠানেই তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোলেমান খান।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূন্য আসনের বিপরীতে দৈবচয়নের ভিত্তিতে আমরা শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নিয়েছি। একটি বিষয় আমরা জানি, সরকারি শিক্ষা সহায়তা পাওয়ার পরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও দেখা যেতো ভর্তি পরীক্ষা থাকলেই কোচিং সৃষ্টি হতো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে শিক্ষার্থীরা পাঠদান পেয়ে দক্ষতা অর্জন করবে, জ্ঞান অর্জন করবে সেটা হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ভর্তি পরীক্ষার নামে আর্থিক ব্যবস্থা, ফিল্টারেশন চালু হয়েছে। ভর্তির নাম করে ফিল্টারেশন চলছিল। অর্থাৎ আমি এই ধরনের শিক্ষার্থীকে নেবো, ওই ধরনের শিক্ষার্থীকে নেবো না।’
ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতা, এমপিও ইত্যাদি শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সমস্যা সৃষ্টি করেছে। কারণ আমরা তথাকথিত স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি। তারা রেডিমেড শিক্ষার্থী নেবে। তাহলে শিক্ষকদের কাজটা কী? কেন তাদের আমরা অবকাঠামো দেবো? কেন এমপিও দেবো?’
‘রাষ্ট্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বৈষম্য তৈরি করতে পারে না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি স্বনামধন্য বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি, সেখানে একটি শ্রেণিতে ৭০ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের নিঃশ্বাস নেওয়ার অবস্থা নেই। শিক্ষার্থীরা সেখানে খুবই করুণ এবং মানবেতর অবস্থার মধ্যে আছে, কিন্তু অভিভাবকরা মানতে রাজি না। শিক্ষার্থীরা যদি ক্লাসের বারান্দাতেও বসতে পারে, তাহলেও অভিভাবকরা খুশি, কারণ ওই বিদ্যালয়ে আমার মেয়েটা পড়ে। একটা মানসিকতা তৈরি হয়েছে, কেন? কারণ ওই বিদ্যালয়গুলোতে সিলেকটিভ এডুকেশন দেওয়া পর্যায়ে এনেছিলাম। সেই বিদ্যালয়ে সমাজের একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পড়ে। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ রাষ্ট্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বৈষম্য তৈরি করতে পারে না। এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রেডিমেড শিক্ষার্থী নেবো। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের এমপিও, প্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালা এবং সরকারের নির্দেশমালা না মানলে তাদের এমপিওসহ সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করা উচিত। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে হলে প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তির ক্ষেত্রে হলে ব্যক্তি। নতুন কারিকুলামের সুযোগ নিয়েও এই কাজগুলো হচ্ছে। তাদের আমরা সতর্ক করছি।’
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘যে ধরনের প্রতিষ্ঠান হোক, যত শক্তিশালী হোক, যারা এসব করছে, তাদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত এমপিও স্থগিত করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচলক অনুরোধ করছি।’