আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরান-সমর্থিত লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর এক কমান্ডার নিহত হয়েছেন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে গাড়িতে চালানো ওই হামলায় ওই কমান্ডারসহ দুজন নিহত হন।
অন্যদিকে লোবানন থেকে চালানো রকেট হামলায় ইসরায়েলে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৫ সৈন্য। বুধবার (১৫ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন বলে লেবাননের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। দক্ষিণ লেবাননের টায়ার এলাকায় একটি গাড়িতে চালানো ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে হিজবুল্লাহর একজন ফিল্ড কমান্ডারও রয়েছেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
মূলত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর জেরে লেবানন সীমান্তেও হামলার মুখে পড়েছে ইহুদিবাদী এই দেশটি।
লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। পাল্টা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলও।
আল জাজিরা বলছে, লেবাননে সাত মাসে আন্তঃসীমান্ত সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ইসরায়েল বলছে, লেবানন থেকে চালানো হামলায় সীমান্তে ১৪ সেনা ও ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। পাল্টাপাল্টি এই হামলায় উভয় পক্ষের কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মূলত গাজায় যুদ্ধের জেরে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় করছে হিজবুল্লাহ। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা তার মিত্র হামাসকে সমর্থন করতে এবং লেবাননে আক্রমণ চালানো থেকে ইসরায়েলকে নিবৃত্ত করতে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করছে।
এদিকে লেবানন থেকে চালানো রকেট হামলায় ইসরায়েলে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, লেবানন থেকে ছোড়া রকেটের আঘাতে সীমান্তের ইসরায়েলি অংশে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরও পাঁচ সেনা আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এক টেলিভিশন ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘উত্তর সীমান্তে ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে আজ একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।’
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘লেবানন থেকে বেশ কয়েকটি ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং একজন সৈন্য মাঝারিভাবে আহত হওয়ার পাশাপাশি অন্য চারজন সামান্য আহত হয়েছে।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নিহত ব্যক্তি ওই গ্রামে বেড়াতে এসেছিলেন।
মূলত গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের সংঘাত শুরুর পর ৯ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলিবিনিময় করছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরায়েল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।
বার্তাসংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত লেবাননে কমপক্ষে চারশো জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। এছাড়া নিহতদের মধ্যে অর্ধশতাধিক বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।