ডেস্ক রিপোর্ট:
ক্যারিবিয়ান দেশ কিউবায় আঘাত হেনেছে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হারিকেন রাফায়েল। স্থানীয় সময় বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ক্যাটাগরি-৩ এই হারিকেনটি দেশটির উপকূলে আছড়ে পড়ে।
আর এতে করে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে সমগ্র কিউবা। মূলত হারিকেন রাফায়েলের জেরে তীব্র বাতাসের কারণে এই সংকটের মুখে পড়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘণ্টায় ১৮৫ বিলোমিটার (১১৫ মাইল) বেগে হারিকেন রাফায়েল কিউবায় আঘাত হানার পর ক্যারিবিয়ান এই দ্বীপটি দেশব্যাপী ব্ল্যাকআউটের শিকার হয়েছে।
দেশটির জাতীয় শক্তি সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হারিকেন রাফায়েলের কারণে সৃষ্ট শক্তিশালী বাতাসের কারণে জাতীয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে”।
বিবিসি বলছে, বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জলোচ্ছ্বাস, আকস্মিক বন্যা এবং কাদা ধসের সতর্কতাসহ ক্যাটাগরি-৩ এই ঝড়টি কিউবার স্থলভাগে আছড়ে পড়ে। তবে এর আগেই কমপক্ষে ৭০ হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেয় কিউবান কর্তৃপক্ষ।
মূলত কিউবার জ্বালানি অবকাঠামোর কিছু সমস্যার কারণে গত অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে ব্ল্যাকআউটের জেরে চার দিন ধরে দেশটির লাখ লাখ লোক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিল। এর কয়েক সপ্তাহ পর আবারও বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের এই ঘটনা ঘটল। এছাড়া গত অক্টোবরের সেই ঘটনার মধ্যে কিউবাতে হারিকেন অস্কার আঘাত হেনেছিল। ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানা সেই হারিকেনের তাণ্ডবে অন্তত ছয়জন নিহত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় সোয়া চারটার দিকে রাজধানী হাভানার কাছে অবস্থিত পশ্চিমাঞ্চলীয় আর্টেমিসা প্রদেশে হারিকেন রাফায়েল আছড়ে পড়ে।
এনএইচসি বলেছে, শক্তিশালী এই ঝড়টি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পশ্চিম কিউবাজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত ঘটাবে এবং এই ঝড় মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
এর আগে গত মাসে রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা এবং পাওয়ার স্টেশন চালানোর জন্য জ্বালানির অভাবের কারণে কিউবা ব্ল্যাকআউটের শিকার হয় এবং সেসময় দেশটির প্রায় ১ কোটি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন ছিল।সেসময় দেশটির প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ৬০ বছরের পুরোনো বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি জোগাড় করতে গিয়ে তারা অসুবিধায় পড়েছেন।
এছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কিউবার পাওয়ার গ্রিড ভেঙে পড়ার মুখে রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা অনেকদিন ধরে সাবধান করে আসছে। কারণ দেশটির বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো অনেক পুরোনো।
এছাড়া সরকারও জ্বালানি কেনার অবস্থায় নেই। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই ক্ষেত্রে কিউবার অবস্থা কেবলই খারাপ হয়েছে।