![শবে বরাতে যেভাবে ইবাদত করবেন](https://www.newspostbd.com/wp-content/uploads/2025/02/98-2.jpg)
ডেস্ক রিপোর্ট:
আমলনামা উত্থাপনের মাস শাবান। এ মাসে আল্লাহর দরবারে আমাদের এক বছরের আমল উত্থাপন করা হয়। তাই এ মাসে বিশেষ করে ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া উচিত। শাবান হলো রমজানের আগমনী বার্তা। শারীরিক ও আত্মিকভাবে রমজানের জন্য প্রস্তুত হতে শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা উচিত। বিশেষত ১৩, ১৪, ১৫ তারিখের রোজা রাখা উত্তম।
লাইলাতুল বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
শাবান মাসের একটি ফজিলত হল, অর্ধ-শাবানের রাত। অর্থাৎ চৌদ্দ শাবান দিবাগত রাত। এ রাতের বিশেষ ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে।
একটি হাদিসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা অর্ধ-শাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন, অতঃপর তিনি তার সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন, কেবল শিরককারী ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতীত (এই দুই শ্রেণিকে ক্ষমা করেন না)। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫, বাইহাকী ৩/৩৮২, হাদিস : ৩৮৩৩)
ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য হল, কোনো বিশেষ সময়ের ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফিরাতের ঘোষণা এলে করণীয় হল, সেই সময়ে সকল গুনাহ থেকে বিরত থেকে নেক আমলের প্রতি যতœবান হওয়া, যেন আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের উপযুক্ত হওয়া যায়।শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়
ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া, বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইস্তিগফার, নফল নামাজ আদায় করা উচিত। দরিদ্রদের সাহায্য করা, জাকাত ও দান-সদকা দিয়ে গরিব-অসহায়দের সাহায্য করা উচিত।
১৪ শাবানের দিবাগত রাতে রাত জাগরণ, দোয়া, ইবাদত ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা সুন্নত আমল।
বর্জনীয়
অনেক অনির্ভরযোগ্য আমলের বই-পুস্তকে এই রাতে নামাজের যে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন লেখা আছে, যেমন এত রাকাত নামাজ পড়তে হবে, প্রতি রাকাতে এই সূরা এতবার পড়তে হবে ইত্যাদি, এগুলো ঠিক নয়। বরং স্বাভাবিকভাবে যেকোনো সূরা দিয়ে দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়বে। এগুলো বিদআত ও কুসংস্কার।
শাবান মাসে কিছু ভুল বিশ্বাস ও বিদআত ছড়িয়ে আছে, যেমন ১৪ শাবানের দিবাগত রাতে বিশেষ পদ্ধতিতে নামাজ পড়া, হালুয়া-রুটির আয়োজন করা, কবর জিয়ারতকে ফরজ মনে করা ইত্যাদি। এসবের কোনো প্রমাণ সহিহ হাদিসে নেই। গুনাহ থেকে বিরত থাকা, মিথ্যা, গিবত, হারাম কাজে লিপ্ত থাকা থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ শাবান মাসে আমলনামা উত্থাপিত হয়।
শুধু শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা, অনেকে মনে করে, শুধু এই রাতেই ইবাদত করতে হবে, অন্য রাতের গুরুত্ব নেই। এটি ভুল ধারণা। বরং পুরো মাসজুড়েই ইবাদত করা উচিত।
শাবান মাস আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ। এটি গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার, আমলনামা শুদ্ধ করার , রমজানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার সুবর্ণ সুযোগ। সুতরাং আসুন, আমরা এ মাসকে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করি, বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করি, রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই বরকতময় মাসের ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন।