জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে মৌসুমের চতুর্থ দফার শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তাপমাত্রা দশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে আলুচাষের জন্য শঙ্কার। এ জেলায় সূর্যের দেখা মিললেও তাতে উষ্ণতা নেই। এ অবস্থার বিরূপ প্রভাব পড়ছে আলুক্ষেতে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, টানা শীতের কারণে কিছু কিছু এলাকায় বোরো ও আলুক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হলেও দিনে রোদের কারণে ক্ষতিটা পুষিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘শৈত প্রবাহের জন্য বিশেষ কৃষি আবহাওয়া পরামর্শে’ বলা হয়েছে, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত হাল্কা কুয়াশা থাকলে আলুর ‘নাবী ধ্বসা’ রোগ হতে পারে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) প্রকাশিত এ পরামর্শে বলা হয়েছে, এজন্য নিয়মিত আলুর ক্ষেতের দেখাশোনা করার পাশাপাশি রোগ দেখা দিলে অনুমোদিত বালাইনাশক দিতে হবে। এছাড়া কচুরিপানা ও খড়ের মতো জিনিস দিয়ে আলুর জমিতে ‘মালচিং’য়ের ব্যবস্থা করতেও পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তীব্র শীত ও কুয়াশায় বোরোর বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে বীজতলার চারা হলুদ ও কিছুটা কালচে হওয়া শুরু করছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খাদেমুল ইসলাম জানান, তার ৫ একর জমির আলু কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি ১৫ শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন। এর মধ্যে ৩ শতক জমির বীজতলা শীতের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে। রোদ ও আবহাওয়া ভালো হলেই এসব বীজতলা সতেজ হয়ে উঠবে।
একই এলাকার কুদ্দুস আলী জানান, ৫ বিঘা জমির জন্য বোরোর বীজতলা ফেলেছেন। তবে এখন যে আবহাওয়া তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। আশপাশের বীজতলা হলদে ও কালো হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে আলুর পাতার ক্ষতির হচ্ছে। ফলে ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁও জেলায় ২৬ হাজার ১৬৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত চাষ হয়েছে ২৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে।